শনিবার, ০৭ Jun ২০২৫, ১০:২০ পূর্বাহ্ন

নোটিশ
সাইটের সংস্কার কাজ চলছে, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পাশে থাকার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।
তারাপুর চা-বাগানের ব্যবস্থাপক রিংকুর নতুন কৌশল : টিলা গর্ত করে দোকান কোঠা নির্মাণ!

তারাপুর চা-বাগানের ব্যবস্থাপক রিংকুর নতুন কৌশল : টিলা গর্ত করে দোকান কোঠা নির্মাণ!

https://newsmirror24.news/
লোকচক্ষুর আড়ালে তারাপুর চা-বাগান দেবোত্তর সম্পত্তি টিলায় গর্ত করে নির্মাণ করা হচ্ছে দোকান কোঠা!

বিশেষ প্রতিবেদক
লোকচক্ষুর আড়ালে তারাপুর চা-বাগান দেবোত্তর সম্পত্তি টিলায় কেটে গর্ত করে নির্মাণ করা হচ্ছে দোকান কোঠা! দোকান কোঠা নির্মাণের পরে রাতের আঁধারে আবার টিলা কেটে তৈরি করা হবে রাস্তা। রাস্তা তৈরির পর দোকান কোঠা ক্রেতার কাছে করা হবে হস্তান্তর! নতুন এই কৌশলটি এবার অবলম্বন করছেন খোদ চা-বাগানের ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী!

দেবোত্তর সম্পত্তি বিক্রি করা যায় না, তবে আত্মরক্ষার জন্য তিনি এখানে শ্রমিকদের ঘর বানিয়ে দেন ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী দাবি করে জানান, বিষয়টি সিলেটের জেলা প্রশাসক, ইউএনও, পরিবেশ অধিদপ্তর অবগত রয়েছেন। তবে এখানে তিনি চা-বাগানের করেরপাড়া ওয়াকওয়ের পাশে শ্রমিকদের পরিবর্তে একজন ব্যবসায়ীর কাছে দোকান কোঠা ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে ভূমি বিক্রি করেছেন। যে ব্যবসায়ী কিনছেন তার নাম অজিত ঘোষ। ওই এলাকারই বাসিন্দা। রাগিব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজের সামনে যে দেবোত্তর সম্পতিতে ২০টি দোকান গড়ে উঠেছে সেখানে ৪টি দোকান এই অজিত ঘোষের ভাতিজার।

সূত্র জানিয়েছে, মন্দিরের উন্নয়ন ও শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার নাম করে বিক্রি করা হচ্ছে তারাপুর চা-বাগানের ভূমি। বিক্রি করা বাগানের ভূমিতে ইতিমধ্যে বসতি গড়ে ওঠেছে। কোথাও নির্মিত হয়েছে ইমারত। কিছু কিছু স্থানে যথারীতি আবাসিক এলাকাও গড়ে ওঠেছে। চা-বাগানের ভূমি রক্ষায় এরই মধ্যে আদালত থেকে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাগান ব্যবস্থাপক কমিটিকে ফাঁকি দিয়ে নিজেই দখল স্বত্ত্বে ভূমি বিক্রি করে টাকা কামাচ্ছেন।

https://newsmirror24.news/

লোকচক্ষুর আড়ালে তারাপুর চা-বাগান দেবোত্তর সম্পত্তি টিলায় গর্ত করে নির্মাণ করা হচ্ছে দোকান কোঠা!

৫ আগস্ট সরকার পতনের আগে আওয়ামী লীগ নেতাদের ওপর দখলদারিত্বের দায় চাপিয়ে নিজেকে আড়াল করেছেন ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী। তিনি বলেছেন, তিনি দখলদকৃত ভূমি উদ্ধারে তৎপর রয়েছেন। অথচ দখল থাকা স্বত্ত্বেও তিনি শ্রমিকদের পরিবর্তে একজন ব্যবসায়ীর কাছে দোকান কোঠা বিক্রি করছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভিন্ন কৌশলে করেরপাড়া ওয়াকওয়ের মেইন রোডের পাশে মোহনা সমাজ কল্যান সংস্থার পিছনে টিলায় ১০ ফুট ভিতরে টিলার মধ্যে বিশাল গর্ত করে আগে তৈরি করা হচ্ছে দোকান কোঠা। কজন শ্রমিক এখানে কাজ করছেন। ঠিক পাশেই পাকা ঘর দিয়ে নতুন আরও ৭টি দোকান কোটা দিয়ে স্থায়ীভাবে মার্কেট তৈরী করা হয়েছে।

স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, করেরপাড়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় শিমুল ঘোষের কাছে জেএল-৭৬, খতিয়ান-১৭, দাগ নং-৯৭ দাগের ৫০ ফুট ও ২০ ফুটের দোকান কোটা বাবদ ৫ লাখ টাকা নেন ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী। এখানে সাক্ষি রাখেন স্থানীয় কাউৃন্সিলর জগদীশ দাসকে। ২০২৩ সালের ৩০ আগস্ট অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর করেন রিংকু। চা-শ্রমিকদের কল্যাণ ও মন্দিরের নামে বাগানের জায়গা বিক্রি ও টিলা কেটে দোকানকোটা নির্মাণে সরাসরি জড়িত বাগান ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী।

সূত্র আরো জানায়, তারাপুর চা বাগান দেবোত্তর সম্পত্তি হওয়ায় দখল হারান রাগিব আলী। আদালত থেকে বাগানের দায়িত্ব পান সেবায়েত পঙ্কজ দাস। কিন্তু রাগির আলী কারাগার থেকে বেরিয়ে রিভিউ করার পর পঙ্কজকে বাদ দিয়ে সেবায়েত পরিবারের একজনকে প্রতিনিধি হিসেবে রেখে আদালত থেকে কমিটি করে দেওয়া হয়। ওই কমিটিতে রয়েছেন জেলা জজ, জেলা প্রশাসক, পুলিশ প্রশাসন, সিটি করপোরেশন, আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন দফতরের একজন করে প্রতিনিধি। কিন্তু কমিটিকে পাশ কাটিয়ে একাই অর্থ উপার্জনের লালসে নামমাত্র মূল্যে দখলদারিত্ব চা-বাগানের ভূমি বিক্রি করে আসছেন বাগান ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী।

লোকচক্ষুর আড়ালে তারাপুর চা-বাগান দেবোত্তর সম্পত্তি টিলায় গর্ত করে নির্মাণ করা হচ্ছে দোকান কোঠা!

দেবোত্তর সম্পত্তি বিক্রি হয় না বলে ক্রেতা অজিত ঘোষ প্রতিবেদককে জানান, আমাকে ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী বলেছেন মন্দিরের উন্নয়নের জন্য টাকা লাগবে। তাই তিনি এখানে একটি দোকান কোঠা বানিয়ে দিচ্ছেন। দোকান হবার পর আমি টাকা দিবো। তিনি প্রতিবেদককে আরো জানান, রাগিব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজের সামনে যে দেবোত্তর সম্পতিতে ২০টি দোকান গড়ে উঠেছে সেখানে ৪টি দোকান এই তারই ভাতিজার। আপনি ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তীর সাথে কথা বলেন।

প্রতিবেদক, সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বক্তব্য নিতে চাইলে ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী উত্তেজিত হয়ে যান, পরে অবশ্য ক্ষমা চেয়ে চায়ের দাওয়াত দেন। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, মন্দিরের উন্নয়ন ও শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার জন্য তিনি ব্যবসায়ী অজিত ঘোষকে দোকান কোঠা নির্মাণ করে ভাড়া দিচ্ছেন। আর এই বিষয়টি সিলেটের জেলা প্রশাসক, ইউএনও, পরিবেশ অধিদপ্তর অবগত রয়েছেন। তারাপুর চা বাগানের ৫শ’ একর জমির মধ্যে ১৩০ একর ধরে রাখতে পেরেছি। বাকি সব অবৈধ দখলে আছে। ইতিমপূর্বে কিছু জায়গায় বাঁশ দিয়ে বেড়া তৈরি করে নিজেদের দখলে রেখেছি। আপনি যে জায়গায় গিয়েছেন, সেখানে মোহনা সমাজ কল্যান সংস্থাসহ যে মার্কেটটি রয়েছে সেটাও দেবোত্তর সম্পত্তি। এই জায়গা উদ্ধার না করে পাশে টিলার আড়ালে কেনো দোকান কোঠা নির্মাণ করছেন, এমন প্রশ্নে করলে তিনি তা এড়িয়ে যান।

উত্তেজিত হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি প্রতিবেদকের সাহায্য চেয়ে বলেন, সাংবাদিকদের যন্ত্রনায় তিনি অতিষ্ঠ। তার বক্তব্য নেয় এক ধরনের আর লিখে অন্য ধরনের। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, দেবোত্তর সম্পত্তি বিক্রি করা যায় না, তবে আত্মরক্ষার জন্য আমরা এখানে শ্রমিকদের ঘর বানিয়ে দেই। মেডিক্যাল কলেজের সামনে ২০টি দোকান আছে সেটাও দেবোত্তর সম্পত্তি। এই দেবোত্তর সম্পতির উপর স্থাপনা সবই অবৈধ। কাগজে কলমে ৩২৩. ৮ একরের মধ্যে ১৩০ একর বাগানের দখলে আছে।

টিলা গর্ত করে দোকান কোঠা নির্মাণের বিষয়টি জানেন না সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোশনূর রুবাইয়াৎ। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, তিনি বাগান ব্যবস্থাপক ও পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সবাইকে বিষয়টি জানাচ্ছেন। এবং এর তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

এ বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলে মুঠোফোন ব্যস্ত থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

শেয়ার দিয়ে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন, ধন্যবাদ।




© All rights reserved © 2012 Newsmirror24.news
Design BY Web Home BD
ThemesBazar-Jowfhowo