নিজস্ব প্রতিবেদক
সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্য সিরাজ খানের বিরুদ্ধে এক নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই নারী এসএমপির জালালাবাদ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। (মামলা নং- ১৩) ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী-২০২৩) এর ৯(৪)(খ) তৎসহ ৩২৩/৩২৬/৫০৬ পেনাল কোড ১৮৬০। মামলা দায়েরের প্রায় ৬ মাস হলেও আসামী সিরাজ খানকে অদৃশ্য কারণে পুলিশ গ্রেফতার করছে না। মামলা দায়েরের পর থেকেই ওই নারী তার পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কোনো ধরনের আইনী সহযোগীতা পাচ্ছেন না!
সিরাজ খান (৫৫) পূর্ব পাঠানটুলার অগ্রণী-১৫৪ নং বাসার মৃত হাফিজ খানের ছেলে। মামলার বাদী সুমা বেগম (ছদ্মনাম)। একই এলাকার বাসিন্দা। ঘটনা ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এর সন্ধ্যার।
সুমা বেগম (৩৫) তার মামলার এজহারে উল্ল্যেখ করেন, সিরাজ খান (৫৫) একজন পরনারী লোভী, লম্পট ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। সিরাজ খান তার আত্মীয়ও হন। সুমা বেগমের স্বামীর অনুপস্থিতি প্রায়ই তার ঘরে গিয়ে তাকে উত্ত্যক্ত করতেন। গেলো বছরের ৪ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টায় সিরাজ খান সুমা বেগমের ঘরে প্রবেশের চেষ্টা করে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি স্থানীয় মুরুব্বীসহ সিরাজ খানের ভাই রাজা খান ও দারা খানকে বিষয়টি অবগত করেন সুমা। সুমা প্রথমে স্থানীয়দের মাধ্যমে বিষয়টি মিমাংসা করার চেষ্টা করেন। এতে আরো ক্ষিপ্ত হন সিরাজ খান। ৫ দিন পর আবার ৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সুমা বেগম তার ঘরে বিছানায় বিশ্রাম করেন এমন সময় সিরাজ খান হাতে চাপাতি নিয়ে সুমা বেগমের ঘরে ঢুকে সিরাজ খান সুমা বেগমের গলায় চাপাতি ধরে গালিগালাজ এবং চুল ধরে ধর্ষনের চেষ্টা করে। এছারাও তার স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেয় এবং সুমা বেগমের কাপড় খুলার চেষ্টা করে সিরাজ খান। নিজের ইজ্জত বাঁচাতে প্রাণ পন চেষ্টা করেন সুমা বেগম। সিরাজ খান তাকে লাথি মেরে মাঠিতে ফেলে দেয়। তখন সিরাজ খান একটি শক্ত লাঠি সদৃশ্য বস্তু দিয়ে সুমা বেগমের স্পর্শকাতর স্থানে আঘাত করে অঙ্গহানীর চেষ্টা করে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পরে থাকে সুমা বেগম। চাপাতি দিয়ে সুমা বেগমের চুল কেটে নেন সিরাজ খান। তার চিৎকারে পরে সে চলে যাবার সময় আবার হুমকি দিয়ে যায় এসব বিষয়ে জানাজানি হলে তার পরিবারের তাকে এবং সন্তানদের হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে সিরাজ খান।
বিষয়টি তার ছোট বোনকে মুঠোফোনে জানালে তারা তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করে চিকিৎসা করান।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সিরাজ খান সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্য, পাশাপাশি ওনার ভাতিজা সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আফসার খান। বিএনপির প্রভাবে সিরাজ খানকে গ্রেফতার করতে পারছে না পুলিশ। সিরাজ খান অতীতেও এরকম আরো ঘটনা ঘটিয়েছে, সেই সময়েও এসব অপকর্ম থেকে পার পেয়ে যায়।
সুমা বেগম জানান, তিনি সুবিচার চান। মামলার আসামী হয়েও সিরাজ খান তাদের দলীয় পাওয়ারে চলা ফেরা করছেন। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না! কোনো অদৃশ্য কারনে না, সিরাজ খান বিএনপির নেতা, এবং তার ভাতিজা সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আফসার খান। জালালাবাদ থানা তাদের নিয়ন্ত্রনে। মামলা দায়েরের প্রায় ৬ মাস হলেও আসামী সিরাজ খানকে পুলিশ গ্রেফতার করছে না। মামলা দায়েরের পর থেকেই আমি ও আমার পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, পাঠানটুলার আরেক বিএনপি নেতা সজিব খানের আত্মীয় সিরাজ খান।
বিষয়টি জানতে সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্য সিরাজ খানের মুঠোফোনে কল করলে তা বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এসএমপির জালালাবাদ মডেল থানার ওসি মো. হারুনুর রশিদ জানান, অপরাধী সে যে দলের হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। প্রশাসন তার গতিতেই চলে। সিরাজ খানকেও ধরে আইনের আওতায় নেয়া হবে।