শনিবার, ০৭ Jun ২০২৫, ০২:৫৫ অপরাহ্ন

নোটিশ
সাইটের সংস্কার কাজ চলছে, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পাশে থাকার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।
সাউদিয়া সিকিউরিটির দুর্নীতির অভিযোগ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে

সাউদিয়া সিকিউরিটির দুর্নীতির অভিযোগ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে

বা থেকে- রুবেল আহমদ, আব্দুল খালিক লাভলু ও সামছু জামান। (ফাইল ছবি।)

বিশেষ প্রতিবেদক
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জনবল নিয়োগে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে ‘সাউদিয়া সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড’ এর বিরুদ্ধে। আউটসোর্সিংয়ের ৬ মাসের জন্য জনবল নিয়োগের দায়িত্ব পাওয়া প্রতিষ্ঠানটি পরিকল্পনা করছে আগামী ২ বছর চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার। দায়িত্ব নিয়েই হাসপাতালের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে আঁতাত করে এই লেনদেন করছেন বলে এই অভিযোগ এবার গিয়েছে দুদক, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক একজন অবসরপ্রাপ্ত এমবিবিএস ডাক্তার এই অভিযোগ পাঠান।

আউটসোর্সিংয়ের এই দরপত্রে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১০টি পদে ২৬২ জন লোক নিয়োগ করা হবে মাত্র ৬ মাসের জন্য। এই কোম্পানীর মালিক এক সময়ের যুবলীগ নেতা রুবেল আহমদ ও যুবলীগ কর্মী সামছু জামান। তাদের নামেই এই দরপত্রটি ইস্যু হয়েছে এবং তাদের নামেই এই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স। জনবল নিয়োগে এখানে টাকা লেনদেন- অবৈথ বানিজ্য হচ্ছে। এই কোম্পানীর নেপথ্যে রয়েছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর, সিলেট মহানগর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রকিব বাবলুর ছোট ভাই সিলেট মহানগর যুবলীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল খালিক লাভলু। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একচেটিয়া দাপট খাটিয়ে ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর, সিলেট মহানগর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রকিব বাবলু। যিনি এখনও জুলাই-আগস্টের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হামলা মামলার আসামী হয়ে বর্তমানে পলাতক। এর আগে দীর্ঘদিন থেকে সাউদিয়া সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানীর এক সময়ের যুবলীগ নেতা রুবেল আহমদ ও যুবলীগের সামছু জামানকে শেল্টার দিতেন। বর্তমানে তারই ছোটভাই সিলেট মহানগর যুবলীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল খালিক লাভলু যিনি জুলাই-আগস্টের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হামলার ৬টি মামলার আসামী। গেলো গত মাসে তাকে প্রশাসন গ্রেফতার করলেও কদিন জেল খেটে বের হয়েই আবারো তিনি যুবলীগ নেতা রুবেল আহমদ ও সামছুজ্জামানকে শেল্টার দিয়ে বড়ভাইয়ের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। এছাড়াও হাসপাতালের দালাল এবং মহিলা চুর চক্রকে এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছেন।

দুদকের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ‘সাউদিয়া সিকিউরিটি সার্ভিস’ এর দরপত্রে তিনি টাকা ইনভেস্ট করেন আব্দুল খালিক লাভলু। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর, সিলেট মহানগর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রকিব বাবলু এবং তার ছোট ভাই সিলেট মহানগর যুবলীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল খালিক লাভলু সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিভিন্ন কাজের দরপত্র এবং নিয়োগ বানিজ্য করে প্রায় ২০ কোটি টাকা বাণিজ্য করেছেন। এসব টাকা দিয়ে জমি, মার্কেট, বাড়ি, রিসোর্টও কিনেছেন। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের রাজত্ব চলছে। হাসপাতালের এই টেন্ডারটি পাওয়ার পরই শুরু হয় তাদের নিয়োগ বাণিজ্য। পলাতক সাবেক কাউন্সিলর সিলেট মহানগর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রকিব বাবলুর ডান হাত হিসেবে পরিচিত রুবেল আহমদ। প্রায় এক যুগের তাদের সম্পর্ক। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাবলুর শেল্টারে নিজেকে হাসপাতাল এলাকায় নিজেকে যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে হাসপাতালে দাপট খাটাতেন। যুবলীগ নেতা রুবেল আহমদ ও সামছু জামান এসএমপির জালালাবাদ এবং কোতোয়ালী থানায় জুলাই-আগস্টের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হামলা মামলার আসামী। টাকার বিনিময়ে বাদিকে ম্যানেজ করে বর্তমানে এই মামলা থেকে অব্যাহতি নেয়ার জন্য এফিডেভিট করে রেখেছেন।

রুবেল আহমদ, তার সহযোগী সামছু জামান ও আব্দুল খালিক লাভলু একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ের ৬ মাস মেয়াদের কাজ ২ বছর পর্যন্ত পার করবেন বলে পরিকল্পনা করছেন। এছাড়াও সিলেট বিএনপির কয়েকজন এবং বিশিষ্ট কজন গণমাধ্যম কর্মীর রিকোয়েস্টে জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবা গ্রহণ নীতিমালা অমান্য করে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজনদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি। মেয়াদ থাকা সত্যেও টাকা না দেওয়ায় চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে অনেককে। আউটসোর্সিংয়ের টেন্ডার বিজ্ঞপ্তিতে তৎকালীন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া উল্লেখ করেছিলেন হাসপাতালের পুরাতন স্টাফদের দিয়েই কাজ পরিচালনা করা হবে। এরা সবাই পরিক্ষীত এবং দক্ষ স্টাফ। তাছাড়া ১শ জনের মধ্যে ৯০ জন হরিজন সম্প্রদায়ের লোক রাখতে হবে। কিন্তু সাউদিয়া সিকিউরিটি সার্ভিসের দায়িত্বরতরা পরিচালকের সেই নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে নিয়োগ বাণিজ্যে মেতে উঠেছেন!

সূত্র জানায়, হরিজন সম্প্রদায়ের কিছু লোকদের ম্যানেজ করেছে এই সিন্ডিকেট। তবে তা আশ্বাস পর্যন্ত। এর আগে গালফ ও আল আরাফাহ সিকিউরিটি সার্ভিসের মাধ্যমে তৎকালীন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়ার মাধ্যমে এই সম্প্রদায়ের ৪০ জন লোককে হাসপাতালে নিয়োগ প্রদান করেন। তখন তারা সবাই সিলেট সিটি কর্পোরেশনে চাকরিতে ছিলো। এই ৪০জন লোককে সিটি থেকে চাকুরি বাদ দিয়ে হাসপাতালে যোগ দেয়। তাদের নিয়োগের মেয়াদ রয়েছে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার জসিম বলেছে জন প্রতি ১ লাখ টাকা দেয়ার জন্য যুবলীগ নেতা রুবেল আহমদ ও সামছুজ্জামানের কাছে, তবেই তারা বহাল থাকবে তাও আরো ২ বছরের জন্য!

৬ মাস মেয়াদের কাজ, প্রায় ৩ মাস অতিবাহিত হয়েছে বাকি ৩ মাস কিভাবে চালাবেন, নাকি ২ বছর মেয়াদ বৃদ্ধির কি পরিকল্পনা করছেন তারা?

নিউজ মিররে প্রতিবেদন প্রকাশের পর আরো কজন ভূক্তভোগী তাদের অভিযোগ নিয়ে যোগাযোগ করেন প্রতিবেদকের সাথে। ভূক্তভোগীদের অভিযোগ, হাসপাতালের দালাল এবং মহিলা চোর চক্রকে নিয়ে আগামী পর্বে থাকছে বিস্তারিত….

শেয়ার দিয়ে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন, ধন্যবাদ।




© All rights reserved © 2012 Newsmirror24.news
Design BY Web Home BD
ThemesBazar-Jowfhowo