শুক্রবার, ০৬ Jun ২০২৫, ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন

নোটিশ
সাইটের সংস্কার কাজ চলছে, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পাশে থাকার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।
ধুপাগুলের পাথর মিলের প্রেস রিলিজে ৬/৯, হামলাকারিকে নিয়ে বৈঠক!

ধুপাগুলের পাথর মিলের প্রেস রিলিজে ৬/৯, হামলাকারিকে নিয়ে বৈঠক!

নিজস্ব প্রতিবেদক
সিলেট সদর উপজেলার ধোপাগুল এলাকায় অবৈধ পাথর মিল উচ্ছেদ অভিযানের সময় ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের উপর হামলা হয় গত ১৩ এপ্রিল রোববার। ওইদিন সকাল থেকে পরিচালিত অভিযানে ৯ টি অবৈধ পাথর মিল উচ্ছে করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানের শেষদিকে বিকেলে জাফলং স্টোন ক্রাশারের মালিক ময়নুল হক (৪৫) হঠাৎ করে অসুস্থ হলে পার্শ্ববর্তী মিলগুলোর মালিক ও শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে দলবদ্ধভাবে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে পাথর দিয়ে হামলা করে। এসময় ৪ পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় স্থানীয়রা এসএমপির এয়ারপোর্ট থানায় পুলিশের কাছে ১২ জনের নামোল্লেখ করে হামলাকারিদের একটি তালিকা দেন। পরদিন সোমবার (১৪ এপ্রিল) এ ঘটনায় পুলিশের এক কর্মকর্তা বাদী হয়ে এয়ারপোর্ট থানায় এসল্ট মামলা করেন। পুলিশের কাছে দেওয়া ওই তালিকা অনুযায়ী হামলায় নেতৃত্ব দেন ক্রাশার মালিক সুজন, মামুন, সুমন, শহিদ মুল্লা, জিয়া, হাবিব, সাগর, মাসুক, রাসেল, গুপি বাবু, ফরহাদ ও সাপ্লায়ার সুহেল।

এঘটনায় বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে নিয়ে তারা ধোপাগুলে মতবিনিময় করেছেন। সর্বশেষ গত বুধবার নগর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীকে নিয়ে মতবিনিময় করেছেন। এ নিয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেছেন বিএনপি নেতারা।

এনিয়ে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে একটি বৈঠক হয়।

সম্মেলন কক্ষে সিলেটের বিভিন্ন জোনের স্টোন ক্রাশার মিল মালিক ও ট্রাক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ। সেখানে তিনি তাদের দুটি সিদ্ধান্ত জানান। একটি হচ্ছে; কোয়ারি থেকে চোরাই পাথর ক্রাশার মিল মালিকরা ভাঙতে পারবেন না। অন্যদিকে হচ্ছে সওজের ভূমি দখল করে ক্রাশার মিলের পাথর রাখা যাবে না। তবে এলসির পাথর ভাঙতে প্রশাসনের কোনো আপত্তি থাকবে না।

তবে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস রিলিজে বলা হয় অন্য কথা। দুটি সিদ্ধান্তের পরিবর্তে বলা হয় বৈঠকে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকের এই প্রেস রিলিজে গড়মিল ৯/৬, হামলাকারিকে নিয়ে বৈঠকের কথা তারা তাদের প্রেস রিলিজেই স্বীকার করেন! গত ১৩ এপ্রিল এ ঘটনায় স্থানীয়রা এসএমপির এয়ারপোর্ট থানায় পুলিশের কাছে যে ১২ জনের নামোল্লেখ করে হামলাকারিদের একটি তালিকা দেন সেই তালিকার একজন গুপি বাবু বৃহস্পতিবার ওই বৈঠকে উপস্থিথ ছিলেন। এছাড়াও ৯ টি অবৈধ পাথর মিল উচ্ছেদের পরিবর্তে বলা হয় ১৪/১৫ টি পাথর মিল গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে! তাদের পরিকল্পনা ৯টি পাথর মিলের বদলে নতুন করে ১৪/১৫টি পাথর মিল বসানোর!

প্রেস রিলিজে উল্লেখ করেন, গত ১৩ এপ্রিল সিলেটের জেলা প্রশাসন কতৃক ধুপাগুলে গড়ে উঠা পাথর মিল উচ্ছেদ অভিযানে যায়। ঐদিন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ১৪/১৫ পাথর মিল গুড়িয়ে দেওয়া হয়। এখানেই ৬/৯ ।

তারা তাদের প্রেস রিলিজ মাধ্যমে জানায়, জেলা প্রশাসকের সাথে বৈঠকে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে, কোনো পাথর মিলে অবৈধ কোনো ধরনের পাথর ভাঙ্গা যাবে না, শুধুমাত্র এল সি পাথর ভাঙতে হবে। পরিবেশের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সে দিকে লক্ষ্য রেখে, প্রতিটি পাথর মিলে পাথর ভাঙ্গার সময় পানি দিয়ে পাথর ভাঙ্গতে হবে। কোনো সরকারি ভূমি অথবা সড়কের জায়গায় পাথর মিল স্থাপন করা যাবে না। শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি মালিকানা জায়গায় পাথর মিল স্থাপন করতে হবে, যদি ধুপাগোল বা অন্য কোন জায়গায় অবৈধ পাথর মিলের প্রমান পাওয়া যায়, তাহলে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সেই সকল পাথর মিল জব্দ করা হবে। কেউ যাতে কোনো ধরনের অবৈধ কাজ করেত না পারে সে দিকে নিজ নিজ দায়িত্বে ও স্টোন ক্রাশার ও পাথর বালু ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দরা বিষয়টি মনিটরিং করবেন। হামলায়-মামলার বিষয়টি নিয়ে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে কোনো মামলায় নিরীহ ও নির্দোষ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রেখে কাজ করতে হবে।

বৈঠকে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ, সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার খোশনুর রুবাইয়াং উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় পাথর মালিক সমিতি, শ্রমিক ইউনিয়ন ও পরিবহন ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন, তার মধ্যে সিলেট জেলা ট্রাক পিকাপ কাভার ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি দিলু মিয়া, কার্যকরী সভাপতি, আব্দুল সালাম, সিলেট জেলা ট্রাক কাভার ভ্যান মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি নাজির আহমদ স্বপন, সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ খান সাদেক, ব্যবসায়ী নেতা ও সিলেট সদর উপজেলা বিএনপি’র নির্বাহী সদস্য মামুন আল রশিদ হেলাল, স্টোন ক্রাশার ব্যবসায়ী ও খাদিম নগর ইউনিয়ন বিএনপি’র সহ সভাপতি সৈয়দ ছালেহ আহমদ শাহনাজ, স্টোন ক্রাশার ব্যবসায়ী ও খাদিমনগর ইউনিয়ন জামায়াত ইসলামি নেতা জয়নুল হক, ব্যবসায়ী নেতা ও সিলেট জেলা যুবদলের সহ সাধারণ সম্পাদক,আবু সাঈদ শাহীন, এয়ারপোর্ট থানা শ্রমিক দলের আহবায়ক আব্দুল মুমিন, ব্যবসায়ী নেতা ও সিলেট জেলা যুবদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল হক, সিলেট সদর পাথর বালু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মন্তাজ আলী, সাধারণ সম্পাদক মুজাম্মেল আলম সাদ্দাম, কোষাধ্যক্ষ আজাদ মিয়া, সিলেট সদর পণ্য পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মুহিবুর রহমান সুলেমান, সহ সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হক, ভোলাগঞ্জ ষ্টোন ক্রাশার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল জলিল, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী বাবুল, ব্যবসায়ী আব্দুল আহাদ, মামুনুর রশীদ, গুপি বাবু, হাবিব, কাজি ফরহাদ, মো:সুজন মিয়া প্রমুখ।

গুপি বাবু। যে ১২ জনের নামোল্লেখ করে হামলাকারিদের একটি তালিকা দেন সেই তালিকার একজন গুপি বাবু বৃহস্পতিবার ওই বৈঠকে উপস্থিথ ছিলেন।

বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসে ক্রাশার মিল মালিকরা জানিয়েছেন- জেলা প্রশাসকের এই সিদ্ধান্ত তারা মানবেন। তবে তার আগে পাথর লুট বন্ধ করতে হবে। তারা যখন যে পাথর পান সেটি ভাঙেন। তবে ভারত থেকে আমদানি করা এলসি’র পাথরই বেশি ভাঙেন তারা। পাথর কোয়ারিতে উৎসব করে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। সেই পাথর ক্রাশার মিল মালিকরা টাকা দিয়ে কিনে ভেঙে বিক্রি করছেন। যদি পাথর না উঠে তাহলে তারা কিনবে না। আগের মতো এলসি পাথর এনে ভাঙবেন।

 

শেয়ার দিয়ে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন, ধন্যবাদ।




© All rights reserved © 2012 Newsmirror24.news
Design BY Web Home BD
ThemesBazar-Jowfhowo