শুক্রবার, ০৬ Jun ২০২৫, ০৯:০০ পূর্বাহ্ন

নোটিশ
সাইটের সংস্কার কাজ চলছে, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পাশে থাকার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।
সিলেটে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেলের জামিন নিয়ে বাদি তুরনের বাণিজ্য

সিলেটে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেলের জামিন নিয়ে বাদি তুরনের বাণিজ্য

বায়ে -আসামি রাসেল ডানে বাদি তুরন

আজ আদালতে দেখা যাবে কে-কার পক্ষ নিয়ে কথা বলেন?

বিশেষ প্রতিবেদক
সিলেটে ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে এফিডেভিট দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর হামলার জড়িত এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন বলে মামলার বাদি। আজ সোমবার তার জামিন চাইবেন আসামি পক্ষের কৌশলীরা। এর আগেও একই মামলায় ওই বাদি (হলফনামা) এফিডেভিট মাধ্যমে আরো দু’জনকে আদালত মাধ্যমে ছাড়িয়ে আনেন।

বিগত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার উপর হামলার ঘটনায় এই মামলা করেন দক্ষিণ সুরমার নোয়াগাও গ্রামের মো. খলিল মিয়ার ছেলে তুরন মিয়া (৪৭)। তিনি নগরীর শুকরিয়া মার্কেটের একটি দোকানের কর্মচারি। গেলো বছরের ১৩ ডিসেম্বর তিনি এসএমপির কোতোয়ালি থানায় বিস্ফোরণ ও অস্ত্র আইনে এই মামলা করেন। মামলা নং-২৬/৫৬৩।

আর এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর হামলার জড়িত মামলার ৩৫ নাম্বার আসামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাহরিয়ার আহমেদ রাসেল। তিনি কুচাইয়ের ৪০ নং ওয়ার্ডে (মাজারের বিপরীতে) বাসার মৃত মাহবুব মিয়ার ছেলে। গত রোববার (২০ এপ্রিল) মধ্যরাত ৩টার দিকে এসএমপির মোগলাবাজার থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

বিষয়টি নিয়ে আদালত পাড়ায় চলছে কানাঘুষা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে বাদি মো. তুরন মিয়া ও আসামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেলকে নিয়ে নেটিজেনরা ‘মামলা বানিজ্য’ বলে পোস্ট দেন। এছাড়াও নেটিজনেরা বলেন, (হলফনামা) এফিডেভিট মাধ্যমে এখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর হামলার বাদিরা প্রকাশ্যে ‘মামলা বানিজ্য’ করছে।

মো. তুরন মিয়া, ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে এফিডেভিট দিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেলের পক্ষে আদালতে গিয়ে সাফাই গাইবেন। তিনি রাসেলকে চিনেন না, এই মামলায় কে বা কারা রাসেলকে ঢুকিয়েছে- তিনি তা জানেন না! রাসেলের জামিনে তার কোনো আপত্তি নেই!

গত বৃহস্পতিবার তুরন মিয়া ও আসামী পক্ষের লোকজন গিয়েছিলেন (হলফনামা) এফিডেভিট করার জন্য আদালত প্রাঙ্গণে। নেটিজনেরা বলেন, (হলফনামা) এফিডেভিট মাধ্যমে এখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর হামলার বাদিরা টাকার জন্য এখন আদালতকেই বেছে নিয়েছেন। এতে করে আদালতের প্রতি সাধারণ মানুষ আস্থা হাড়াচ্ছে!

এদিকে আদালতের একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘মামলা বানিজ্য’ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর হামলার মামলার বাদিরা এফিডেভিট মাধ্যমে আসামিকে ছাড়িয়ে আনতে যে সকল বাদিরা একের অধিক এফিডেবিট করছেন। যারা এসব করছেন, তাদেরকেও নজরদারিতে রেখেছে আদালত। এবার তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিবে আদালত।

সূত্রটি আরো (হলফনামা) এফিডেভিট মাধ্যমে আজ সোমবার আদালতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেলে পক্ষের আইনজীবিরা তার জামিনের জন্য আবেদন করবেন।

শাহরিয়ার আহমেদ রাসেল দক্ষিণ সুরমা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এবং সাবেক এমপি হাবিবুর রহমানের হাবিবের অনুসারী। সরকার পতনের পরপরই নিজের লেবাস পাল্টাছেন তিনি। কিন্তু কোনোভাবেই নিজেকে রেহাই করতে পারেন নি। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার উপর হামলার ঘটনায় অস্ত্র মামলাসহ একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকতে তার বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র মজুদেরও গুঞ্জন রয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনকে ইস্যু করে ৫ আগস্টের পর সিলেটে অসংখ্য মামলা করেছেন বিএনপি জামায়াত নেতাসহ আহতরা। এসব মামলার অনেক বাদি গ্রেফতার হওয়া আসামিদের ছাড়াতে আসামি পক্ষের কাছ থেকে মোটা অঙ্গের টাকার বিনিময়ে বাদি নিজে (হলফনামা) এফিডেভিট নিয়ে আদালতে হাজির হচ্ছেন।

চট্টগ্রামের একটি ঘটনা। গত বুধবার চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনের ঘটনায় করা এমনই এক মামলায় আসামি জড়িত নয় বলে হলফনামা (এফিডেভিট) দেন এক বাদি। পরে নিজে আদালতে হাজির হয়ে জামিনে আপত্তি নেই জানান। আসামি করেও আবার জামিন চাওয়ার এ ঘটনায় পরে বাদি এবং আসামি দু’জনকেই জেলে প্রেরণের নির্দেশ দেন আদাল। চট্টগ্রামে ঘটা এ ঘটনা ফলাও করে প্রকাশ করে প্রথম আলো পত্রিকা।

এদিকে, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেলের ভাই সুহেল এলাকার বিভিন্ন লোকদের জানিয়েছে রাসেলকে ছাড়াতে মেকানিজম করছেন সিলেটের জাতীয়তাবাদী আইনজীবিরা। তবে সিলেটের জাতীয়তাবাদী আইনজীবিরা জানিয়েছেন, রাসেলের জামিনের বিরোধীতা করবেন তারা। এবং প্রয়োজনে বাদিকেও কাঠগড়ায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

অপরদিকে, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপি কিংবা সহোযোগী সংগঠনের কোনো নেতা বা কর্মী যদি কাউকে এমনভাবে এফিডেভিট দেয়ার ঘটনার খবর মিলে তাহলে দেশের যেকোনো আদালতে বাদি এবং আসামি উভয়ের বিপক্ষে যেনো দলীয় আইনজীবীরা আদালতে হাজির হয়ে উভয়ের বিরোধিতা করে জামিন না মঞ্জুরে ভূমিকা রাখেন।

এবিষয়ে মামলার বাদি তুরন মিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিতো সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি কেনো স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেলের পক্ষে আদালতে গিয়ে সাফাই গাইবো। আমার সাথে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেলের ভাই সুহেলসহ অনেকেই যোগাযোগ করেছেন। আমাকে টাকারও প্রলোভন দিয়েছেন। আমি তাদের সাফ না করে দিয়েছি।

শেয়ার দিয়ে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন, ধন্যবাদ।




© All rights reserved © 2012 Newsmirror24.news
Design BY Web Home BD
ThemesBazar-Jowfhowo