দক্ষিণ সুরমার দাউদপুর ইউনিয়নের সুড়িগাঁওর এখলাছ উদ্দিন অভিযোগ করেছেন ‘মৌরসি সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে তিনি চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন। স্থানীয় জামায়াত কর্মী মুক্তার হোসেনের শেল্টারে আওয়ামী লীগের কর্মীরা তার পরিবারের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। আওয়ামী লীগ কর্মী খালিক আহমদ ও তার পুত্র যুবলীগ ক্যাডার সাহেদ তার ওপর হামলা ও বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। এমনকি সংবাদ সম্মেলন করে তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছে।’
বুধবার বাংলাদেশ মাল্টিমিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন সিলেট বিভাগীয় কমিটি (বিএমজেএ) আয়োজিত বেলা ১টায় অস্থায়ী কার্যালয়ে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে এখলাছ উদ্দিন আরও জানান, ‘মৌরসী সম্পত্তি নিয়ে একই গ্রামের আব্দুল জব্বারের পুত্র ফয়সল আহমদ ও ফলিক আহমদের সাথে তাদের পূর্ব বিরোধ চলছে। যে কারণে তার পিতা সমছু মিয়া আদালতে স্বত্ত মোকদ্দমা দায়ের করেছেন।’ তিনি বলেন, ফয়সল আহমদ পরিবার পরিজন নিয়ে দেশের বাইরে থাকায় সন্ত্রাসী প্রকৃতির খালিক আহমদ ও তার পুত্র যুবলীগ ক্যাডার সাহেদ আহমদকে তার পেছনে লেলিয়ে দিয়েছেন। এরা পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের দোসর, জুলাই আন্দোলনের সময় নিরীহ ছাত্রদের ওপর গুলিবর্ষণকারী, ভূমিখেকো এবং মাদক সেবনকারী। এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সিলেটের বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। খালিক আহমদের আত্মীয় একই গ্রামের বাসিন্দা জামায়াতের কর্মী মুক্তার হোসেন তাদের শেল্টার দেওয়ায় ওই চক্র আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলেও জানান তিনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সংবাদ সম্মেলনকারী আব্দুল খালিক ও তার পুত্র সাহেদ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত। ২০২১ সালে পুরাতন ঘর ভেঙ্গে নতুন ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নিলে এই খালিক, সাহেদ চক্র তার নিকট চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেয়ায় তারা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায় এবং ভাংচুর করে। একইসাথে তারা বাড়িঘর লুটপাঠ করে ব্যাপক নির্যাতন চালায়। এ ঘটনায় তার স্ত্রী পারভিন বেগম বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। এরপর গত ৪ এপ্রিল আবারো অস্ত্র নিয়ে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। ওই দিনের হামলার ঘটনায় তার ছেলে কামরান উদ্দিন তানজু বাদী হয়ে মোগলাবাজার থানায় মামলা দায়ের করে। এই মামলার আসামিরা হচ্ছে ওই চক্রের সদস্য একই গ্রামের কটু মিয়ার পুত্র জামায়াত নেতা মুক্তার হোসেন, আওয়ামীলীগ কর্মী ছবিল মিয়া, জুবেল মিয়া, মুক্তারের পুত্র রাজ আহমদ ও ছবিল মিয়ার পুত্র মাদকসেবী রাবিব মিয়া। এরপর আব্দুল খালিক ও তার পুত্র যুবলীগ ক্যাডার সাহেদ আহমদ ও রাসেদ আহমদ গত ১১ মে সকালে তার বাড়ির সামনে এসে ডাকাডাকি করে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে ওইদিনই তিনি বাদী হয়ে মোগলাবাজার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। গত ২৩ মে মুক্তার হোসেন, ছবিল মিয়া, জুবেল মিয়া, ছবিল মিয়ার পুত্র মাদকসেবী রাবিব মিয়াসহ কয়েকজন আবারো গাড়িযোগে তার বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে গালিগালাজ ও হুমকি দেয়। তাদের বিরুদ্ধেও মোগলাবাজার থানায় সাধরণ ডায়েরি করেন।
এছাড়া, গত ১১ মে আব্দুল খালিক ও তার পুত্র যুবলীগ ক্যাডার সাহেদ আহমদ, রাসেদ আহমদ সংঘবদ্ধ হয়ে অগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তার ফিসারিতে এসে মাছ ধরতে নিষেধ প্রদান করে। তারা ফিসারি এলাকার গাছ এবং বৈদ্যুতিক লাইন কেটে নেয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মোগলাবাজার থানার সাধারণ ডায়েরী নং ৪৮৭ দায়ের করেছেন বলেও জানান।
সংবাদ সম্মেলনে এখলাছ উদ্দিন বলেন, তিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। যে কারণে বিগত ১৬ বছর এই সংঘবদ্ধ আওয়ামী চক্রের নির্যাতনের শিকার হয়ে বাড়িঘর ছাড়া ছিলেন। তাদের সম্পত্তি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের মীমাংসা করতে ২০২১ সালে একটি উদ্যোগ নেন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আহমেদ জিলু এবং দাউদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিকুল হকসহ তিন উপজেলার মুরব্বিয়ান। কিন্তু তার প্রতিপক্ষের লোকজন সেই আপোষ মেনে নেয়নি। মূল বিষয়কে আড়ালে রেখে খালিক আহমদ যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্য়ায়িত করেন তিনি। তার ওপর নিপীড়নকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।