নিজস্ব প্রতিবেদক
সিলেট নগরীর এয়ারপোর্ট থানাধীন চাতলিবন্দ এলাকায় একটি পরিবারের সদস্যদের বেধড়ক মারধর করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে ডেভিল নুরুল আমীন খুকু ওরফে খুকু মেম্বার। খুকু জালালাবাদ থানার নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। চাতলিবন্দ এলাকার মৃত আবুল কালামের ছেলে। ছাত্র জনতার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সে আওয়ামী লীগের পক্ষে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলো। খুকু সেই সময়ে নির্বিচারে হামলা চালিয়ে ছিলো নিরিহ ছাত্রজনতার উপর। সে গত বছরের ১৮ জুলাই শাবিপ্রবি এবং পাঠানটুলা এলাকায় প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়েছিলো। সে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের উপর হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলার আসামী। সর্বশেষ গতকাল বুধবার (২ জুলাই) দুপুরের এয়ারপোর্ট থানাধীন চাতলীবন্দ এলাকায় একই পরিবারের সদস্যদের বেধড়ক মারধর করে।
খুকু তার সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলায় গুরুতর আহত হন চাতলীবন্দ এলাকার মৃত সফাত উল্লাহের ছেলে ছুরাব আলী (৬৯), তার স্ত্রী রত্না বেগম (৫৫) ও তাদের ছেলে রাকিব আলী (২৮), রাব্বি আল হাসান (২০)।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, চাতলীবন্দ এলাকার মৃত সফাত উল্লাহের ছেলে ছুরাব আলী এক মালিকের বর্গা চাষ করেন। প্রতিদিনের মতো বুধবার সকালে জমিতে গিয়েছিলেন তিনি। তখন একই এলাকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হামলাকারি একাধিক মামলার আসামি নুরুল আমিন খুকু মেম্বার (৩৫) ও তার ভাই রুহুল আমিন অপু এবং আব্দুল আলিমসহ আরও ৫/৬ জন জমিতে এসে ছুরাব আলীকে ক্ষেতে কাজ করতে বাধা নিষেধ করে। এসয় ছুরাব আলীর সাথে তর্কবিতর্ক হলে ডেভিল নুরুল আমিন খুকু মেম্বারসহ সকলে ছুরাব আলীকে মারধর করে। তখন বাড়িতে থাকা ছুরাব আলীর স্ত্রী ও তার ছেলেরা এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা সবাইকে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে মারপিট করে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বর্তমানে তারা সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে আহতদের পরিবার জানিয়েছেন।
এদিকে, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর হামলার ঘটনায় চাতলিবন্দ এলাকার কালাম মিয়ার ছেলে নুরুল আমিন খুকু মেম্বারের উপর ৩টি মামলা রয়েছে। ৩টি মামলা থাকা সত্ত্বেও সে এলাকায় নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এই নিয়ে এলাকায় বেশ আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন,
জানা গেছে, গত বছরের ১৮ জুলাই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ছাত্রলীগের ক্যাডারদের একত্রিত হয়ে নিরিহ ছাত্রজনতার উপর নির্বিচারে হামলা চালায়। তার অস্ত্রের মহড়ায় তখন আতঙ্কিত ছিলেন ওই এলাকার স্থানীয়রা। জালালাবাদ ও এয়ারপোর্ট থানার কিছু অসাধু পুলিশকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে সে নির্ভয়ে এলাকায় তার বেপরোয়া আওয়ামী তান্ডব চালাচ্ছে।
সূত্র জানায়, ছাত্রলীগ ক্যাডার কুকুর বিরুদ্ধে এসএমপির কোতোয়ালী থানায় মামলা নং ১২, তারিখ ১২/০৯/২০২৪, জালালাবাদ থানয় মামলা নং-৬, তারিখ ২৪/০৮/২০২৪ সহ এসএমপির বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যূত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের অনেক সন্ত্রাসীরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও কুকু এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশের তালিকায় সে পলাতক থাকলেও তাকে দেখা যাচ্ছে প্রকাশ্যে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও সরব। গত ১ এপ্রিল মঙ্গলবার নিজের বাড়িতে জন্মদিনের আয়োজনও করেছিলেন।
সিলেট এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মো. আনিসুর রহমান বলেন, চাতলিবন্দ এলাকায় একটি মারামারির খবর পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।