বিশেষ প্রতিবেদক
নিজকে রক্ষা করার জন্যে অনেক চেষ্টা করেছিলেন সিলেট জেলা যুবলীগের গ্রন্থনা-প্রকাশনা সম্পাদক লোকমান আহমদ। ৫ আগস্টেও পর থেকে দুধর্ষ এই নেতা সিলেটের বিএনপির নেতাদের ঘরে ঘরে ছুটে গেছে নিজকে রক্ষা করতে। মামলা থেকে রক্ষা পেতে সব ধরণের তদবির করেছিলেন। নিজকে অনেকটা রক্ষাও করেছিলেন। এই বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক কানাঘুষা চলে। অনেকটা প্রকাশ্যে চলে আসে লোকমানের তদবিরের বিষয়টি। শেষ পর্যন্ত সকল তদবির ব্যর্থ হয়ে যায়। গত ২ ফেব্রুয়ারি লোকমানের বিরুদ্ধে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে।
৪ আগস্ট নগরীর মহাজনপট্টিতে তান্ডব পরিচালনাকারী লোকমানের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন রেজাউল ইসলাম নাহিদ।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, ১৯ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার উপর হামলাকারীদের অন্যতম ছিলেন লোকমান আহমদ। বিভিন্ন অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সামনের সাড়িতে দেখা যেত লোকমানকে। অনেক সন্ত্রাসী হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন। সর্বশেষ ৪ আগস্ট মহাজন পট্টিতে ব্যাপক তান্ডব চালায়।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আত্মগোপনের গর্তে চলে যান লোকমান। সেখান থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে স্থানীয়, জেলা ও মহানগর বিএনপির কতিপয় নেতার সাথে যোগাযোগ করেন। এই কাজে তাকে সহযোগিতা করেন মুখোশধারী কতিপয় সুবিধাভোগী। ২-১ দিন না যেতেই প্রকাশ্যে আসেন লোকমান। সিলেট শহরতলির মেজরটিলার মোহাম্মদপুরের আজির ক্যাসল নামক বাসায় বসে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষাকরতে থাকেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান গভীর রাত পর্যন্ত ওই বাসায় ছুটে আসতেন সুবিধাভোগী ও দালালরা। ২ ফেব্রুয়ারি মামলা হওয়ার পর ওই আনাগোনা অনেকটা কমে গেছে। কিন্তু থামেনি লোকমানের দৌড়ঝাপ। এখন তিনি পুলিশের হাত থেকে রক্ষা পেতে বিএনপির কতিপয় নেতার দ্বারস্থ হয়েছেন। ফলও পাচ্ছেন। প্রকাশ্যে ঘুরে বেরাচ্ছেন। নিজের বাসা আজির ক্যাসলে নিয়মিত সুবিধাভোগীদের সাথে আড্ডা দিচ্ছেন। নিজের দলের সোর্স ছুটে আসেন তার কাছে। খবর আদান প্রদান করে হাওয়া হয়ে যায় সোর্স। এছাড়া সিলেট আদালত পাড়ার সরকারি দুইজন আইন কর্মকর্তার সাথে ইতোমধ্যে চুক্তিও করেছেন জামিন লাভের আশায়।
লোকমান আহমদ নিজকে নিরাপদ রাখতে কয়েকজন জামায়াত নেতার সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু ওইসব নেতা লোকমানের কোনো আবদারই আমলে নেননি। জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু সে প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। তবে এখন বিএনপিতে যোগ দেয়ার চেষ্টা করছেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বিএনপির ঘরে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির শীর্ষ এক নেতা জানিয়েছেন ফ্যাসিস্টদের কোনো জায়গা হবে না বিএনপিতে। তাদের বিচার হবে বাংলার এই মাটিতে।