শুক্রবার, ০৬ Jun ২০২৫, ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন

নোটিশ
সাইটের সংস্কার কাজ চলছে, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পাশে থাকার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।
সিলেটে মেয়াদপূর্তির পরও বীমার টাকা দিতে টালবাহানা পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের

সিলেটে মেয়াদপূর্তির পরও বীমার টাকা দিতে টালবাহানা পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের

বিশেষ প্রতিবেদক
কষ্টার্জিত টাকা বীমায় তিলে তিলে সঞ্চয় করেছেন গ্রাহকরা। কেউ জমানো টাকা একসাথে টাকা পেয়ে সংসারের কাজে লাগাবেন, কেউবা সন্তানের বিয়েতে কিংবা চিকিৎসায়। আবার কেউ কেউ আছেন নিজ ব্যবসাকে আরো বড়, সমৃদ্ধির চেষ্টায়। কিন্তু বাঁধ সাধল ইন্সুরেন্স কর্তৃপক্ষ। তাদের প্রতারনার শিকার হয়ে গ্রাহকের স্বপ্ন এখন দু:স্বপ্নে পরিণত।

বীমা আইন অনুযায়ী মেয়াদ উর্ত্তীণের ৯০ দিনের মধ্যে গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও বিপরীত পথে হাঁটছে পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানীর সিলেট অফিস। ক্যান্সার রোগী থেকে শুরু করে নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত গ্রাহকরা মেয়াদ পূর্ণ হলেও এখন পর্যন্ত বুঝে পাননি তাদের দাবিকৃত টাকা।

সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারের এলিগ্যান্ট শপিংমলের ৫ম তলায় অবস্থিত পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের আঞ্চলিক অফিসের প্রতারণায় মেয়াদপূর্তির কয়েক বছর পার হয়ে গেলেও বীমার টাকা বুঝে পাচ্ছেন না একাধিক গ্রাহকরা। নানান অজুহাতে সময়ক্ষেপন করে একের পর এক প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। বারবার ধর্ণা দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না শতাধিক গ্রাহক। এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের কষ্টার্জিত জমানো টাকা পাওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন গ্রাহকরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাসিক ও বার্ষিক স্কীমে মেয়াদপূর্ণ হয়েছে প্রায় তিন বছর আগে, এমন অসংখ্য গ্রাহক প্রতিদিন ভীড় জমাচ্ছেন বীমা অফিসে। গ্রাহকদের বেশির ভাগই অসুস্থ ও সমস্যাগ্রস্থ। তবুও প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তরা দায়িত্বহীন আচরন করে যাচ্ছেন।

দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত রুনা বেগম জানান, টাকার জন্য আমি চিকিৎসা করাতে পারছিনা। প্রায় আড়াই বছর হল আমার বীমার মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু এতদিন ধর্ণা দিয়েও বীমার টাকা পেলাম না। জানিনা বেঁচে থাকতে এ টাকা পাবো কি না। টাকাটা পেলে একটু উন্নত চিকিৎসা করাতে পারতাম।

পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের আরেক গ্রাহক তামান্না খানম পলি বলেন, দুই বছর হল আমার বীমার মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে কিন্তু আজ নয়তো কাল করে শুধু সময় নষ্ট করছে কর্তৃপক্ষ। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। তাদের এক উত্তর- ঢাকা থেকে চেক না আসলে কিভাবে টাকা দিবো।

বীমা গ্রাহক বেলাল বলেন, প্রতিদিনই কোন না কোন টালবাহানা করে আমাদেরকে বুঝ দেয়া হয়। কিন্তু কোন প্রতিকার পাচ্ছি না।

মেয়াদপূর্ণ হওয়া গ্রাহক – শাকিলা বেগম, চম্পা বেগম, খাদিজা বেগম তছিরুন বেগম, আকলিমা বেগম রনি, হোসেন আহমদসহ আরো অনেক গ্রাহকের একই রকম অভিযোগ।

এ বিষয়ে পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের প্রকল্প পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, পপুলার কোম্পানীর আইন অনুযায়ী মেয়াদ পূর্ণের ৯০ দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ করার কথা। মেয়াদপূর্ণ গ্রাহকদের দাবীকৃত টাকা না পাওয়ার পেছনে প্রথমত কর্মীরা দায়ী। তবে আমাদের কাছে যেগুলো অভিযোগ আসে আমরা তা সমাধান করার চেষ্টা করি। স্থানীয় অফিসের সকল দায়-দায়িত্ব আমিনুল ইসলামের হলেও তিনি দায় নিতে নারাজ।

পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের হিসাবরক্ষণ বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ২০২২ সালে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে এমন অসংখ্য ফাইলের গ্রাহকরা এখনো তাদের বীমার টাকা বুঝে পাননি। আমরা ঢাকায় ফাইল প্রেরণ করি কিন্তু তারা দাবিকৃত টাকার চেক প্রেরণ না করলে আমরাতো আর গ্রাহকদের টাকা বাড়ী থেকে এনে দিতে পারবো না।

পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স সিলেট অফিসের ম্যানেজার অনিল জানান, মেয়াদপূর্ণ গ্রাহকদের ফাইল ঢাকায় পাঠিয়েছি। ঢাকা অফিস থেকে চেক না আসলে আমরা কিভাবে টাকা দেব।

ডিএমডি সৈয়দ মোতাহার হোসেনের বলেন, মেয়াদপূর্ণের পরও টাকা পাচ্ছেন না এরকম বিষয়টি আমার জানা নেই। সাধারণত এসব বিষয় স্থানীয়ভাবে দেখা হয়। তবে কি কারণে গ্রাহকরা টাকা পাচ্ছেন না সে বিষয়ে আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি।

শেয়ার দিয়ে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন, ধন্যবাদ।




© All rights reserved © 2012 Newsmirror24.news
Design BY Web Home BD
ThemesBazar-Jowfhowo