নিউজ মিরর ডেস্ক
হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বিরাট গ্রামে মাদক ব্যবসার পেছনে রাজনৈতিক শেল্টারের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই এলাকার বাসিন্দা মো. জাবেদ মিয়া। বুধবার (৪ জুন) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন জাবেদ মিয়া। সংবাদ সম্মেলনে জাবেদ মিয়ার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার চাচা মফিজুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী জজ মিয়া দীর্ঘদিন ধরে সরকারি খাস জমি দখল করে হেরোইন, ইয়াবা, গাঁজা ও বাংলামদসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য বিক্রি করে আসছে। তার এই কর্মকাণ্ডে শেল্টার দিচ্ছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হুমায়ুন কবির।
সংবাদ সম্মেলনে মফিজুর রহমান বলেন, “আমরা আজমিরীগঞ্জ থেকে এসেছি দেশের মানুষ ও প্রশাসনের সামনে সত্য তুলে ধরতে। ঈদের বাজার বাদ দিয়ে এসেছি এই সামাজিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে।”
তিনি অভিযোগ করেন, মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় হুমায়ুন কবিরের ছত্রচ্ছায়ায় জজ মিয়া ও তার অনুসারীরা আরও বেপরোয়াভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। গত ৮ মে গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক মানুষ মাদকবিরোধী অবস্থান নিলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং অবৈধ ঘর ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করলে আজমিরীগঞ্জ থানায় দুটি মামলা রেকর্ড হয়, যার মধ্যে একটি মামলার নম্বর ১৪/৫৬, তারিখ ২৫ মে ২০২৫।
পরে ১৭ মে স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত নেতাদের উদ্যোগে আপোষ বৈঠক আয়োজন করা হলে সেখানে আজমিরীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ উপস্থিত থাকলেও আওয়ামী লীগ নেতা হুমায়ুন কবিরের উসকানিমূলক মন্তব্যের কারণে বৈঠকে পুনরায় সংঘর্ষ বাধে এবং বৈঠক ব্যর্থ হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, হুমায়ুন কবির ২০১৫-১৬ সালে সিলেটের দরগাহ গেইটে একটি বাসা দখলের সময় গণধোলাইয়ের শিকার হয়ে ডিবি পুলিশের হাতে আটক হন। এছাড়া, ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট সিলেটে বিস্ফোরক মামলায় ৪৯ নম্বর আসামী হিসেবেও তার নাম রয়েছে।
মফিজুর রহমান বলেন, “জজ মিয়া শুধু মাদক ব্যবসায়ী নন, সে একজন চিহ্নিত ডাকাত এবং হত্যা মামলারও আসামী। হুমায়ুন কবির তার শেল্টারদাতা হিসেবে কাজ করছে। যদি কোনো বড় ধরনের ঘটনা ঘটে, এর দায় তাকেই নিতে হবে।”
তিনি আরও জানান, ২ জুন মামলার হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে জজ মিয়ার অনুসারীরা গ্রামের প্রবীণ মুরব্বী সুলতান মিয়াকে মারধর করে আহত করে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলেন, স্থানীয় মাদক কারবারির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বিরাট গ্রামের জজ মিয়া, হুমায়ুন কবির, রুবেল মিয়া, সাদেক মিয়া, তনেক মিয়া, মুকিত মিয়া, স্বাধীন মিয়া, দিলু মিয়া, ইকবাল মিয়াসহ আরও কয়েকজনের নাম প্রকাশ করা হয় এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয় যাতে করে গ্রামে শান্তি ফিরে আসে এবং যুবসমাজ মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা পায়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, আজমিরীগঞ্জের বিরাট গ্রামের পক্ষ থেকে সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন সরষ, মফিজুর রহমান, বাশার মিয়া, জাবেদ মিয়া প্রমুখ।