শুক্রবার, ১৩ Jun ২০২৫, ০৪:০৮ পূর্বাহ্ন

নোটিশ
সাইটের সংস্কার কাজ চলছে, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পাশে থাকার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।
দেশে করোনার সংক্রমণ উর্ধ্বমুখী, সরকারের ১১ নির্দেশনা

দেশে করোনার সংক্রমণ উর্ধ্বমুখী, সরকারের ১১ নির্দেশনা

নিউজ মিরর ডেস্ক
নতুন করে আবারও করোনার সংক্রমন ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে। বিশেষ করে ভারতে গত কিছুদিনে এর ব্যাপক সংক্রমণের ফলে সতর্ক অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে সংক্রমণ রোধে শনিবারের মধ্যে সব হাসপাতালে আলাদা করে কোভিড শয্যা প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বুধবার সংবাদ সম্মেলনে করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুতি ও পরামর্শ তুলে ধরা হয়। বুধবার দুপুরে দেশের করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তররে সংবাদ সম্মেলন করেন অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক ডা. মো. মঈনুল আহসান।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও রোগীর চিকিৎসায় আগামী শনিবারের মধ্যে দেশের সব সরকারি হাসপাতালে সার্বক্ষণিক কোভিড-১৯ রোগীর জরুরি চিকিৎসা নিশ্চিতে আলাদা শয্যা প্রস্তুতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নতুন করে শুরু হচ্ছে পরীক্ষা: এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতর নতুন করে আবারও করোনা পরীক্ষা শুরু করতে যাচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার মো. আবু জাফর। তিনি বলেন ইতিমধ্যে ২৮ হাজার কিট দেশে এসেছে।

প্রাথমিকভাবে যেসব হাসপাতালগুলোতে করোনা পরীক্ষা চালু হবে সেগুলো হলো : ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বরিশাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।

মো. আবু জাফর বলেন, টিকার কিট ইতিমধ্যে আমরা সংগ্রহ করেছি। যেখানে আর্টিফিশিয়ালি হয় সেখানে এখনো পরীক্ষা হচ্ছে। কিছু কিছু জায়গায় মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। এ জন্য যথেষ্ট সংখ্যক কিট আমরা সংগ্রহ করেছি।

তিনি বলেন, ২৮ হাজার র‌্যাপিড এন্ডিজেন্ট কিট এসেছে। আরও ১০ হাজার আর্টিফিশিয়াল এন্টিজেন্ট ও কিট আজকের মধ্যেই আমরা পাবো। এছাড়া আমরা অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছি, আশা করছি কিটের কোনো সমস্যা হবে না।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, প্রাথমিকভাবে সব ধরনের রোগীর করোনা পরীক্ষার কোনো প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র যাদের জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট বা অন্যান্য উপসর্গ রয়েছে এবং যারা জটিল অবস্থায় রয়েছে, তারাই করোনা পরীক্ষা করাবে। চিকিৎসকেরাও সেই অনুযায়ী পরামর্শ দেবেন।

তিনি বলেন, ভ্যাকসিন চলমান রয়েছে। যাদের কখনোই ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি তাদের অবশ্যই ভ্যাকসিন নিতে হবে। বিশেষ করে ১৮ বছরের উপরে যারা, ‘ডিফারেন্ট কন্টাক্ট পারসনের’ (বিভিন্ন ব্যক্তিদের) সঙ্গে কাজ করেন, প্রেগনেন্ট উইমেন (অন্তঃসত্ত্বা নারী) তাদের ভ্যাকসিন দিতে হবে। আর পুরাতনদের মধ্যে ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের ভ্যাকসিন দেওয়া জরুরি।

দেশে করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত যেমন ছিল, এখনো কিন্তু একই রকম আছে। ১২ থেকে ১৩ শতাংশের মধ্যে রয়েছে।

সবশেষ মঙ্গলবার (১০ জুন) ১০১ জনের করোনা পরীক্ষা করে ১৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর আগের দিন (সোমবার) ৪১ জনের মধ্যে ৫ জনের করোনা ধরা পড়েছে। এই হার কিন্তু আশপাশের অন্যান্য দেশের তুলনায় কম।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার মো. আবু জাফর বলেন, যেহেতু পাশের দেশগুলোয় কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব বেড়েছে, তাই সরকারের দায়িত্ব হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে এবং কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এ সময় জনগণ যাতে আতঙ্কিত না হয়, সে জন্য জনসচেতনতা বাড়াতে গণমাধ্যমকর্মীদেরও স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি প্রচারের আহ্বান জানান তিনি।

১১ দফা নির্দেশনাধ: এদিকে সংবাদ সম্মেলনে মহাপরিচালক ডা. মো. আবু জাফর ১১ দফা নির্দেশনা পড়ে শোনান। লিখিতে বক্তব্যে তিনি বলেন, ভাইরাসজনিত সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনা ভাইরাসের কয়েকটি নতুন সাব ভ্যারিয়েন্ট ইতোমধ্যে চিহ্নিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের বিস্তার প্রতিরোধে দেশের সকল স্থল/নৌ/বিমান বন্দরের আইএইচআর ডেস্কসমূহে নজরদারি এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়গুলো জোরদার করার বিষয়ে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নিম্নলিখিত নির্দেশনা ও করনীয়সমূহ গণমাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো-

সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসাধারণের করনীয়- জনসমাগম যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন এবং উপস্থিত হতেই হলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন। শ্বাসতন্ত্রের রোগ সমূহ হতে নিজেকে রক্ষার জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন। হাঁচি/কাশির সময় বাহু বা টিস্যু দিয়ে নাক মুখ ঢেকে রাখুন। ব্যবহৃত টিস্যুটি অবিলম্বে ঢাকনা যুক্ত ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলুন। ঘনঘন সাবান ও পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন (অন্তত ২০ সেকেন্ড)। অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক, মুখ ধরবেন না।

আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন এবং কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন:
সন্দেহজনক রোগীদের ক্ষেত্রে করনীয়: জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকুন। রোগীর নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে বলুন। রোগীর সেবাদানকারীগনও সতর্কতা হিসেবে মাস্ক ব্যবহার করুন। প্রয়োজন হলে নিকটস্থ হাসপাতালে অথবা আইইডিসিআর (০১৪০১-১৯৬২৯৩) অথবা স্বাস্থ্য বাতায়ন (১৬২৬৩) এর নম্বরে যোগাযোগ করুন।

শেয়ার দিয়ে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন, ধন্যবাদ।




© All rights reserved © 2012 Newsmirror24.news
Design BY Web Home BD
ThemesBazar-Jowfhowo