নিউজ মিরর ডেস্ক
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে এক মাদরাসার মুহতামিমকে নামাজ থেকে ধরে নিয়ে হাত বেঁধে নির্যাতন করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিদ্দেক আলী ও তার লোকজন। এ ঘটনার একটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হলে জগন্নাথপুরে উপজেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার (১৮ জুন) সন্ধ্যা ৭ টায় উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের তলের বন হাওরস্থ মো. ফারুক মিয়ার ফার্মের দক্ষিণপাড়া বেড়ীবাঁধের উপর এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী মুহতামিম মাওলানা শরীফ উদ্দিন জিয়া (৪৫) উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের মহিষাকোনা গ্রামের মৃত আবলুছ উল্ল্যাহর ছেলে। এই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার দুপুরে জগন্নাথপুর পৌর পয়েন্টে চিলাউড়া- হলদিপুর ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনসাধারণের আয়োজনে নির্যাতনকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
এদিকে, নির্যাতনের মাওলানা শরীফ উদ্দিন জিয়া আজ বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) জগন্নাথপুর থানায় ৫ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা হলেন মহিষাকোনা গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিদ্দেক আলী, ছিদ্দেক আলীর ছেলে মামুন সিদ্দিকি, আব্দুল আহাদের ছেলে কামরুল ইসলাম, মৃত পাইনা মিয়ার ছেলে নিজাম উদ্দিন, আবদুল আহাদের ছেলে জুনায়েদ আহমদ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যা ৭ টায় পালিত গরু আনতে হাওরে যান মাওলানা শরিফ উদ্দিন জিয়া। মাগরিবের আজান দিলে বেরিবাঁধের উপর নামাজ পড়ছিলেন তিনি। নামাজরত অবস্থায় আসামিরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সহকারে তাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে দিয়ে দুই হাত বেঁধে বাম পায়ে রামদা দিয়ে আঘাত করে। এসময় তাকে বেদম মারপিট করা হয়। মারধরের একপর্যায়ে মুহতামিমের পাঞ্জাবীর পকেট থেকে একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল হাতিয়ে নিয়ে যায় তারা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী মাওলানা শরীফ উদ্দিন জিয়া বলেন, চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দেক আলীর নেতৃত্বে ও তাঁর ছেলে মামুন সিদ্দেকসহ কয়েকজন বিগত প্রায় ২ মাস পূর্বে তারা মাদরাসায় এসে আমার কাছে চাঁদা দাবি করে। এতে আমি অপারগতা প্রকাশ করলে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে আমার উপর নামাজরত অবস্থায় হামলা করে পরে আমার হাত বেঁধে নির্যাতন চালায়।
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভুঞা বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।