শুক্রবার, ০৬ Jun ২০২৫, ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন

নোটিশ
সাইটের সংস্কার কাজ চলছে, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পাশে থাকার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।
নির্বাচনের আগে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে : জামায়াত আমির

নির্বাচনের আগে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে : জামায়াত আমির

নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে বলে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ওই শর্তগুলো হলো—সংস্কার, ফ্যাসিস্টদের বিচার এবং সঠিক নির্বাচন পদ্ধতি। লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে নয়, বিভিন্ন বিষয়ে সাধারণ আলোচনা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

গত রোববার লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির এবং নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। সেখানে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে শফিকুর রহমান আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সাংবাদিকদের এ কথা জানান। ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যে প্রায় ১১ দিনের সফর শেষ করে গত সোমবার তিনি দেশে ফেরেন। এই সফর সম্পর্কে জানাতে আজ দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেল ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দলটি।

সংস্কার প্রক্রিয়ায় সব রাজনৈতিক দলকে সরকারকে সহায়তা করা উচিত উল্লেখ করে জামায়াতের আমির আরো বলেন, ‘যত দ্রুত তারা সরকারের সাথে সমন্বয় করবে, তত দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আগে দৃশ্যমান, গ্রহণযোগ্য এবং মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন। জামায়াত ৪১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে, বিএনপি ৩১ দফা, অন্যরা ৫৬-৫৭ দফা প্রস্তাব করেছে। তবে জামায়াত শুধুমাত্র ছয়টি মৌলিক সংস্কার চায়। ​

তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্টদের বিচার এমনভাবে হওয়া উচিত, যাতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়। নির্বাচনকে এমনভাবে পরিচালনা করতে হবে, যাতে কেউ সহজে প্রক্রিয়াটি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে। এ বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে আরও সংলাপ ও আলোচনা প্রয়োজন।’

এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির বলেন, তারা এই বিচারের জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিচ্ছেন না। কিন্তু এটা তাদের দাবি।

লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে নয়, বিভিন্ন বিষয়ে সাধারণ আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শফিকুর রহমান।

জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর মতো বিএনপিও জুলুমের শিকার হয়েছে। ব্যক্তি হিসেবে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও জুলুমের শিকার। দেশ থেকে যাওয়ার আগে আমরা চিন্তা করেছিলাম (খালেদা জিয়ার সঙ্গে) একটা সাক্ষাৎ হবে। কিন্তু যেকোনো কারণেই হোক, সেটি আমরা করতে পারিনি। ইউরোপ সফরে যাওয়ার পর আমার এক পরিবারের সদস্যের সঙ্গে দেখা করতে সেখানে (যুক্তরাজ্য) গিয়েছি। এরপর খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছি।’

এই দেখা করার মূল উদ্দেশ্য তার (খালেদা জিয়া) খোঁজখবর নেওয়া ছিল বলে উল্লেখ করেন শফিকুর রহমান।

জামায়াতের আমির বলেন, রাজনীতিতে মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু সেটা যেন মতবিরোধে রূপ না নেয়। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই মতপার্থক্য থাকুক, নয়তো রাজনীতিবিদেরা অন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু এ–ও প্রত্যাশা করি, এটি যাতে মতবিরোধে রূপ না নেয়। ওটা পার্থক্য পর্যন্ত থাকুক। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের রাজনীতিবিদেরা অনেক সময় বিষয়গুলো খেয়াল করেন না বা করি না। এটা করতে হবে। যদি আমরা দেশকে ভালোবাসি, তাহলে এই ভালোবাসার, শ্রদ্ধার জায়গায়, মিউচুয়াল রেসপেক্টের জায়গায় আসতে হবে। আমার ওপিনিয়ন (মতামত) আমি দিব, কিন্তু এটা বলতে পারব না যে এটাই করতে হবে। আমি ওপিনিয়ন দিয়ে বলব যে এটা করলে আমার দেশ ও জাতির উপকার হবে। আর এটা আমি করতে দিব না, যে যা–ই চাক, এটাও রাজনীতি ও গণতন্ত্রের ভাষা নয়।’

ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমন্ত্রণে সম্প্রতি ব্রাসেলসে সফরে যায় জামায়াতের প্রতিনিধিদল। সেখানে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে শফিকুর রহমান বলেন, ‘এটি নিয়ে অবশ্যই কথা হয়েছে। আওয়ামী লীগের ব্যাপারে তাঁরা জানতে চেয়েছেন? হ্যাঁ, চেয়েছেন। সবাই চাননি, দুয়েকটি জায়গায় তাঁরা চেয়েছেন। আমরা তাঁদের বলেছি, আমাদের দেশে কেবল একটা গণহত্যা হয়ে গেছে। শহীদের মা, শিশুরা এখনো কান্নাকাটি করছে। স্ত্রীরা কান্নাকাটি করছে। আহতরা কেউ কেউ এখনো হাসপাতালের বেডে আছে। আমরা জাতি হিসেবে তাদের আমাদের যা করণীয়, সেটাও পুরোপুরি করে উঠতে পারিনি। গোটা জাতি ট্রমাটাইজড। কারণ, জুলাই-আগস্ট এই সময়টায় সরকার কার্যত গোটা জাতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। এই আন্দোলন কোনো একক দলের বা পক্ষের ছিল না। এটা ছিল জনতার আন্দোলন।’

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হওয়া তিনটি নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) তো অপার সুযোগ পেয়েছিল। একটানা তিনটা নির্বাচন তাদের অধীনে করেছে, কিন্তু সেই নির্বাচনগুলোকে নির্বাচন রাখল না কেন! তারা তো নির্বাচনের জান কবজ করেছে। এমনকি জনগণ তো বলে, তাদের (আওয়ামী লীগ) যারা সমর্থন করে, তারাও নির্বাচনের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছিল, তারাও ভোট দিতে যায়নি। দিস ইজ ফ্যাক্ট। তো সে রকম একটা দলকে বাংলাদেশের জনগণ এই মুহূর্তে গ্রহণ করবে কি না এবং আওয়ামী লীগও তাদের মানসিকতা পরিবর্তন করেছে কি না, এটা বিশাল প্রশ্ন। এ কথা বলার পর তারা (বিদেশি) আর কিছু বলেনি। তারা ওখানেই থেমে গেছে। রিয়েলিটি (বাস্তবতা) সবাইকে মেনে নিতে হবে এবং দিস ইজ রিয়েলিটি।’

শেয়ার দিয়ে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন, ধন্যবাদ।




© All rights reserved © 2012 Newsmirror24.news
Design BY Web Home BD
ThemesBazar-Jowfhowo