নিউজ মিরর ডেস্ক
সিলেটে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ইফতার মাহফিলে নেতাকর্মীদের মধ্যে হট্টগোল ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সাংবাদিকরা ছবি ও ভিডিও তুলতে গেলে অসদাচরণ ও ক্যামেরা কেড়ে নিতে চেষ্টা করেন দলটির নোতকর্মী, সমর্থকরা। এর প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা ইফতার অনুষ্ঠান বয়কট করে বেরিয়ে যান।
শনিবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় সিলেট নগরীর বালুচরস্থ আমানউল্ল্যাহ কনভেনশন সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শান্ত নামে লিডিং ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইফতারের ঠিক ৭/৮ মিনিট আগে মঞ্চে বক্তব্য রাখছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসমিন জারা। এমন সময় মঞ্চের সামনে আসন ইস্যু, বক্তৃতা দেওয়াকে কেন্দ্র করে তরুণ নেতৃত্বে গড়া দলটির নেতাকর্মীরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এসময় ঘটনার ভিডিওচিত্র ধারণকালে সাংবাদিকদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সাংবাদিকরা তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ জানালে তারা উল্টো তেড়ে আসে।
পরে সাংবাদিক নেতাদের হস্তক্ষেপে তারা সরে গেলেও পরবর্তীতে ইফতার না করেই সাংবাদিকদের বড় একটি অংশ কনভেনশন সেন্টার থেকে বেরিয়ে আসেন। এছাড়া ছাত্রদের একটি পক্ষ ইফতার না করেই বেরিয়ে বাইরে গিয়ে বিক্ষোভ করে দলের নেতাকর্মীদের অশ্রাব্য গালিগালাজ করেন। ইফতার পরবর্তী সময়ে নেতাকর্মীরা আবারো মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক পদবীর এক নেতা বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের মধ্যে বেশ কয়েকটি গ্রুপ রয়েছে। এরমধ্যে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা নাসির, গালিবসহ অন্তত ২৫/৩০ জন ইফতার মাহফিলে এসে হট্টগোল ও হাতাহাতি করে বেরিয়ে যায়। ইফতার পরবর্তীতেও তারা হাতাহাতিতে জড়ায়।
ওই নেতা বলেন, ইফতারের সময় পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত থাকলেও পরবর্তীতে আবারো হট্টগোল হয়।
এদিকে, ইফতার পূর্ব সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সমন্বয়কারী নাসির উদ্দিন পাটোয়ারি বলেন, হাসনাত আব্দুল্লাহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন কমিটির সঙ্গে মিটিং করছেন। তার বক্তব্য স্যোসাল মিডিয়ায় আসা উচিত হয়নি। আমরা মনে করি, এটা শিষ্টাচার বহি:র্ভূত হয়েছে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের বিভিন্ন ফাংসনারি যা যা আছে, ও আমরা দেখছি, সেনা নিবাসের বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ রাজনৈতিক জায়গায় হস্তক্ষেপ করছেন। এই ধরণের হস্তক্ষেপ আমাদের কাছে কাম্য নয়।
এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক এহতেশামল হক বলেন, যারা এই আচরণ দেখাচ্ছে, তারা কুক্ষিগত করতে চাচ্ছে। তারা পাওয়ারটা এভিউজ করতে চায়, বক্তৃতা দিতে চায়। এনসিপির নামে তারা চাঁদাবাজি করতে চায়।
তিনি বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম করে উশৃঙ্খল মানুষ হট্টগোল করার চেষ্টা করে। মেহমান সাংবাদিকদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করে। এটার দায় এড়াতে পারিনা। জুলাই বিপ্লবকে পুঁজি করে যারা শক্তি প্রদর্শন ও চাঁদাবাজি অন্যায় সুযোগ নিতে চায়, তাদের কোনো স্থান এনসিপিতে হবে না। তাছাড়া যারা ছাত্র, তারা গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদে যোগদান করতে পারে। আর পড়াশোনা শেষ করে এনসিপিতে যোগদান করতে পারবে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে কোনো প্লাটফর্ম নেই।