বিশেষ প্রতিবেদক
চিনি চোরাচালানের সিন্ডিকেটদের এবার নিরাপদ সড়ক হয়ে দাড়িয়েছে সিলেটের সালুটিকর-গোয়াইনঘাট রোড। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে এ রোডের নিয়ন্ত্রণ ছিল ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাদের হাতে। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর চিনি চোরাচালানের সিন্ডিকেটের হাতবদল হয়েছে। তবে চোরাচালান আসা অব্যহত রয়েছে।
চোরাকারবারিদের দেয়া তথ্যমতে, এই সুযোগটি কাজে লাগিয়েছে ওই এলাকার কথিত যুবদল-ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। তাদের নেতৃত্বেই এখন সীমান্ত এলাকা থেকে চোরাই চিনি ট্রাকে, সিএনজি অটোরিক্সায়, মোটরসাইকেলে করে এনে নিরাপদে সিলেটের বিভিন্ন গোডাউন ও নগরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো এবং খুচরা বিক্রি করছে একটি সিন্ডিকেট।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই সিন্ডিকেটের প্রধান আমির হোসেন নামক এক ব্যক্তি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নিজেকে যুবদলের এক নেতার ভাই পরিচয়ে এই রোডে একচেটিয়া ব্যবস্যা করে আসছেন। কথিত যুবদল-ছাত্রদলের নেতাদের ছত্রছায়ায় আমির হোসেন মোটরসাইকেল দিয়ে চিনি চোরাচালানের ব্যবসা করছেন। এই ব্যবসার জন্য তিনি ২০ জন শ্রমিকও নিয়োগ দিয়েছেন। নিজের গোডাউনে ভারতীয় চিনির বস্তার পলিথিন পরিবর্তন করে মোটরসাইকেল যোগে চিনির বস্তা শহরের বিভিন্ন গোডাউনে পাঠাচ্ছেন। এমনকি শহরের বিভিন্ন দোকানেও সেল করছেন আমির হোসেন। এমনই কিছু ভিডিও এসেছে নিউজ মিরর’র কাছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটের সালুটিকর এলাকার কাকুয়ারপাড়ের বাসিন্দা আমির হোসেন। তিনি তার বাড়িতে ভারতীয় চিনি নিরাপদে রাখার জন্য একটি গোডাউন তৈরি করেছেন। গোয়াইনঘাট সড়ক দিয়ে ফতেহপুর থেকে সালুটিকরের কাকুয়ারপাড় সেই গোডাউনে ভারতীয় চিনির চালান আনেন। পরে সেখান থেকে বস্তার পলিথিন পরিবর্তন করে মোটরসাইকেল যোগে চিনির বস্তা ১/২/৩টি করে শহরের বিভিন্ন গোডাউনে পাঠান। অনেক সময় ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক করে এয়ারপোর্ট বাইপাস সড়ক হয়ে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ভারতীয় চিনি বিক্রি করান আমির হোসেন।
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, আইন-শৃখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ ও কথিত রাজনৈতিক কিছু নেতা কর্মী এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন থেকে আমির হোসেন চোরাচালানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বিষয়টি জানতে আমির হোসেনকে কল করলে তিনি জানান, ভারতীয় চিনির বস্তাগুলো সালুটিকর বাজার থেকে কিনে আনেন এবং পরে তিনি তা তার নিজ দোকান কাকুয়ারপাড়ে বিক্রি করেন।
বিষয়টি জানা নেই সিলেট এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মো. আনিসুর রহমানের। তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।