আন্তর্জাতিক ডেস্ক
দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নামিবিয়ার রুক্ষ মরুভূমির মধ্যেই গড়ে উঠেছে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ মোকাবেলা করার বিশেষ কেন্দ্র। দেশের বৃহত্তম বন্দর ওয়লভিস বে-র ১২০ কিমি উত্তর-পূর্বে জার্মানির সহায়তায় তৈরি হয়েছে হাইড্রোজেন প্রকল্প, যা নামিবিয়াকে পরিবেশবান্ধব শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে আশার আলো দেখাচ্ছে।
হাইআয়রনের সবুজ লৌহ প্রকল্প
নামিবিয়ার সূর্যের তেজকে কাজে লাগাতে আরান্ডিস শহরের কাছে স্থাপন করা হয়েছে ৪৪ হাজার সৌর প্যানেল। মার্চের শেষ থেকেই পরিবেশবান্ধব হাইড্রোজেন তৈরি করছে হাইআয়রন। সংস্থার প্রধান জোহানেস মিশেলস জানান, বছরে মাত্র ৩০ ঘণ্টা মেঘাচ্ছন্ন থাকে এই অঞ্চল।
হাইআয়রনের ওশিভেলা প্রজেক্ট নামিবিয়ার প্রথম আধুনিক লোহার কাজের সংস্থা। এখানে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করে লোহার কাজ হয়। মিশেলসের দাবি, এর ফলে নামিবিয়া বিশ্বের প্রথম দেশ হবে যারা কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ না করেই লৌহ সামগ্রী তৈরি করবে।
নামিবিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট হাগে গাইনগবের স্বপ্ন ছিল দেশের অর্থনীতিকে হাইড্রোজেন নির্ভর করে তোলা। দেশটিতে বেকারত্ব এই মুহুর্তে ৩৭ শতাংশ। ফলে তারা এখন শিল্প পরিকাঠামোয় মনও দিয়েছে। এই বিশাল হাইড্রোজেন প্রকল্প হাইফেন সেই উদ্যোগের ফল।
ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৮ সালের মধ্যে নামিবিয়া ১০ লাখ টন পরিবেশবান্ধব অ্যামোনিয়া উৎপাদন করবে, যা ইউরোপ ও এশিয়ায় রফতানি করা যাবে।
তবে এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে অভিযোগের তীরও উঠেছে। নামিবিয়ান চেম্বার অফ এনভায়রনমেন্টের আশঙ্কা, এর ফলে ওই অঞ্চলের জাতীয় উদ্যান বা ন্যাশানাল পার্কের ক্ষতি হবে। হাইফেন অবশ্য তা মানতে নারাজ। তারা স্থানীয় সমাজ ও পরিবেশ-বিষয়ক একটি গবেষণা পত্রও প্রকাশ করেছে।
হাইফেন প্রজেক্টটি সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন হবে ভবিষ্যতে। তবে হাইআয়রন এখনই প্রায় ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে।
জার্মানির ভূমিকা
এই প্রজেক্টের মাধ্যমে নামিবিয়ার কার্বনমুক্ত প্রকল্প আরো শক্তিশালী হবে। হাইআয়রনের এই বিশাল কর্মকাণ্ডে রয়েছে জার্মান বিনিয়োগ। অর্থনীতি ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় বিনিয়োগ করেছে ১.৩ কোটি ইউরো।
অন্যদিকে জার্মানির শিক্ষা ও গবেষণা মন্ত্রণালয় অন্য দুটি প্রকল্পে ২.২ কোটি ইউরো বিনিয়োগ করছে। এছাড়াও হাইফেনের মূল শেয়ারের মালিক পূর্ব জার্মানির শক্তি উৎপাদন সংস্থা এন্টারটাক।