বিশেষ প্রতিবেদক
সিলেটে কখনো ঝাটিকা মিছিল, কখনও হামলা চালাচ্ছে আওয়ামী লীগের ডেভিলরা। তারা আবারও সক্রিয় হচ্ছে। গত ২ এপ্রিল বুধবার নগরীর ধোপাদীঘিরপাড়ে মিছিল করে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ। এবার স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের উপর হামলা! ডেভিলরা তাদের জানান দিচ্ছে ভিন্নভাবে।
শুক্রবার রাতে সিলেটে নগরীর উপশহরে ল’ কলেজের সামনে গাড়ি পার্কিং নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকর্মীদের ২ দফা পিটিয়েছে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাদের ধারালো অস্ত্রের কোপে গুরুতর আহত হন জাতীয়তাবাদী সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য সচিব আজিজুল হোসেন আজিজসহ ৪ জন।
শুক্রবার রাতে ১ম দফার পর ২য় দফায় ৮নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর শারমিন আক্তার রুমির মাছিমপুরের বাসায় এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন এলাকার একটি পরিবার ছাড়া কোনো স্থানীয় বাসিন্দারা ছিলেন না এই হামলায়।
১ম দফা ঘটনার পর রাতেই আজিজুল হক আজিজের অনুসারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ছুটে যান মাছিমপুর এলাকায়। কিন্তু তারা জানতেন না এখানে ডেভিলদের আস্তানা। উপশহরে ল’ কলেজের সামনের ঘটনার পরই সেই সব ডেভিলরা তাদের বাসার পিছনের বড় কোলোনীর মানুষদের জড়ো করে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আগে থেকেই ওত পেতে থাকে।
এসময় আওয়ামী লীগ কর্মী মান্নান, তার ছেলে ২৩নং ওয়ার্ড যুবলীগ কর্মী অপু, ২৩নং ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা মঞ্জু, আলম খান মুক্তি গ্রুপরে ছাত্রলীগ নেতা দিপু, ছাত্রলীগের বিধান গ্রুপের ছাত্রলীগ কর্মী অপি, যুবলীগের মুজিব, ২৩নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লায়েক, ২৩ নং ওয়াড ছাত্রলীগের অনিক এই হামলার নেতৃত্বদেন। তারা একই পরিবারের লোক। তাদের সাথে ছিল তাদেরই কোলোনীর লোকজন। হামলার সময় তারা ডাকাত-ডাকাত বলেও চিৎকার করে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করে। পরে আজিজের অনুসারীদের প্রতিহত করে। এসময় স্বেচ্ছাসেবক দলের আরও ৩ জন আহত হন এবং ৩১টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা দিপু বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ৮টি মামলার আসামী।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে ৮নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর শারমিন আক্তার রুমি বলেন, তাদের পরিবারের কেউই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত নন। অথচ তারই পরিবারে লোকজন ওরা।
ঘটনার পরপরই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মিছিলের, অনুষ্ঠানের তাদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ভাইরাল হয়। নেটিজেনরা ফেসবুকে সিলেট বিএনপি নেতাদের প্রশ্ন ছুড়েছেন, এই এলাকায় বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের পদধারী নেতাদের বাসস্থান। তারা কেনো প্রশাসনকে এসব ডেভিলদের অবস্থান সম্পর্কে জানান নি? হামলার আগে কেনো তারা নীরব ভূমিকায় ছিলেন? প্রশাসনের গোয়েন্দা সংস্থার কাজ কি?
দ্বিতীয় দফা হামলার পর সিলেটের বিভিন্ন ইউনিটের বিএনপির নেতাকর্মীরা মধ্যরাতে ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে মাছিমপুর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কোনো মামলা বা কাউকে আটক করা যায়নি।