নিউজ মিরর ডেস্ক
সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার একটি গ্রামের ৫ তরুণসহ ৬ জন কাজের উদ্দেশ্যে কক্সবাজার গিয়ে ৫দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। ওই ৬ জন গত ১৫ এপ্রিল বিকেলে সিলেট থেকে থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। পরদিন ১৬ এপ্রিল সকালে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে পৌঁছা পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও এরপর থেকে তাদের সকলের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের লোকজন বার বার তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কারো কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় তাদের পরিবারে বাড়ছে উৎকন্ঠা। তারা ৬ জনই জকিগঞ্জ উপজেলার ৪নং খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহার মহল গ্রামের বাসিন্দা।
নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খলাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য সফর উদ্দিন।
পুলিশ বলছে- মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাকিং করে ৬ জনের অবস্থান কক্সবাজার দেখাচ্ছে। পুলিশ এনিয়ে কাজ করছে। নিখোঁজদের স্বজনরা তাদের সন্ধান পেতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
নিখোঁজ ৬ জন হলেন- জকিগঞ্জ উপজেলার ৪নং খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের মৃত লুকুছ মিয়ার ছেলে রশিদ আহমদ(২০), ফারুক আহমদের ছেলে মারুফ আহমদ (১৮), আজির উদ্দিনের ছেলে শাহিন আহমদ (২১), মৃত দুরাই মিয়ার ছেলে এমাদ উদ্দিন (২২), সফর উদ্দিনের ছেলে খালেদ হাসান (১৯) ও মৃত সরবদি’র ছেলে আব্দুল জলিল (৫৫)।
জানা যায়, সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার ৪নং খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের ৫তরুণসহ ৬জন রাজ মিস্ত্রি কাজের উদ্দেশ্যে গত ১৫ এপ্রিল বিকেলে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। ১৬ এপ্রিল কক্সবাজার পৌঁছা পর্যন্ত পরিবারের সাথে তাদের যোগাযোগ ছিলো। কিন্তু এরপর থেকে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
নিখোঁজ এমাদ উদ্দিনের চাচাতো ভাই আব্দুল বাছিত দুলাল বলেন, কক্সবাজার পৌঁছার পর কল দিয়ে জানিয়েছিল তারা সেখানে পৌঁছেছে। এরপর থেকে ৬ জনের মোবাইল ফোন এক সাথে বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের লোকজন কক্সবাজারে যাচ্ছেন সেখানে গিয়ে থানায় জিডি করবেন। জকিগঞ্জ থানায় অভিযোগ নিচ্ছে না।
নিখোঁজ রশিদ আহমদের ভাই আব্দুল বাছিত বলেন, ৪-৫ বছর ধরে রশিদ চট্টগ্রামে কাজ করে। বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল। কক্সবাজার এই প্রথম গিয়েছে। ওইখানে এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতো। ওইদিনও ওই ঠিকাদারের কাছে তারা যায়। এরপর থেকেই তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি তারা স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকতো বা কেউ জিম্মি করে থাকতো তাহলে তো টাকা পয়সা চাইতো এরকম কিছুই না। আমাদের ধারণা তাদেরকে ওইখানে যে লোক নিয়েছে ওই লোক কিছু করেছে। তবে ঠিকাদারের নাম ঠিকানা কোনো কিছু জানাতে পারেননি নিখোঁজ রশিদের ভাই বাছিত।
নিখোঁজ খালেদ হাসানের বাবা ও ইউপি সদস্য সফর উদ্দিন বলেন, তারা প্রায় সময়ে কাজের জন্য চট্টগ্রাম ৫-৬ মাস থাকে। ঈদে বা ওয়াজের সময় বাড়িতে আসে। আবার সেখানে গিয়ে কাজ করতো। মঙ্গলবার আমার ছেলে বলে যায় আব্বা যাইরামগি। এরপর থেকে আর কোনো যোগাযোগ নেই। তার মা বার বার ছেলের জন্য কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। কোনো ভাবেই শান্তনা দেয়া যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, গতকাল সারারাত থানায় ছিলাম। যে ঠিকাদার ছিল তার মোবাইল বন্ধ। ওই ঠিকাদারের নাম রশিদ ও তার সাথের একজনের নাম বাবুল বলে জানিয়েছেন থানার ওসি।
সফর উদ্দিন আরও বলেন, যে জায়গা থেকে তারা নিখোঁজ হয়েছে সেখানে অভিযোগ দেয়ার জন্য পুলিশ জানিয়েছে। আমাদের এলাকার আরও লোকজন সেখানে রয়েছেন তারাও তাদের মতো করে খোঁজাখুজি করছেন।
এব্যাপারে জানতে চাইলে জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, নিখোঁজ ৬জনই দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে কাজ করে। এখন হঠাৎ করে পরিবারের লোকজন যোগাযোগ করতে পারছেন না। আমরা গত ১৮ এপ্রিল বিষয়টি অবগত হয়েছি। এরপর থেকে কাজ করছি, মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে তাদের অবস্থান কক্সবাজার দেখাচ্ছে। কারো পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দেয়া হয়নি।