বিশেষ প্রতিবেদক
প্রতি বছর ঈদুল আজহা আসলেই প্রভাবশালী মহলের ইন্দনে সিলেট নগরীতে বসে অবৈধ ‘পশুর হাট’। এবারো নগরীর একাধিক স্থানে অবৈধ ‘পশুর হাট’ বসানোর পরিকল্পনা করছেন তারা। প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব হাট বসলেও অজ্ঞাত কারণে প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করেন। নগরীর বিভিন্ন এলাকার চিহ্নিত ওইসব ব্যক্তিবর্গ দলীয় প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ হাট বসাবেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন অবৈধ ‘পশুর হাটের’ বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। প্রতিবছরই যত্রতত্র এই কোরবানির অবৈধ ‘পশুর হাট’ নিয়ে বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতা ঘটে। চিহ্নিত কিছু রাজনৈতিক নেতাসহ প্রভাবশালীরা এর নেপথ্যে থাকায় প্রশাসন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে না। তাই শেষ মুহূর্তে নগরীর প্রতিটি পাড়া-মহল্লার রাস্তায় যেন পশুর হাটে পরিণত হয়। বিশেষ করে নগর এলাকায় হাট বিড়ম্বনা দেখা দেয় বেশি। ঈদের হাটের শেষ দিকে এসে পুরো নগরী অস্থায়ী হাটে পরিণত হয়।
এদিকে, অতীতের মতো এরকম হবে বলে জানিয়েছে আইন প্রয়োগকারী একটি সংস্থার সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র। সূত্রটি জানিয়েছে, পুলিশ, র্যার, গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি এসব বিষয় এবার মনিটরিং করবে সেনাবাহিনী।
অপরদিকে সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ঈদুল আযহা উপলক্ষে যে সকল অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এইসব অস্থায়ী পশুর হাট ছাড়া কোনোভাবেই অবৈধ ‘পশুর হাট’ বসতে দেবে না তারা।
একটি সূত্র জানিয়েছে, নগরের বিভিন্ন স্থানে শেষ মুহুর্তে অবৈধ ‘পশুর হাট’ বসানোর জন্য পরিকল্পনা করছেন অনেকেই। প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে সিসিকের নাম ভাঙ্গিয়ে ‘বিশেষ ক্ষমতা বলে মৌখিক’ অনুমোতি এবং আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যে রকম হতো- ‘ভুয়া কাগজ’ বানিয়ে নিয়ে অবৈধ ‘পশুর হাট’ বসাবেন অনেকেই।
সূত্র জানিয়েছে, উপশহরের গার্ডেন টাওয়ারের পাশে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের গলিতে সাংবাদিকদের নাম ভাঙ্গিয়ে অবৈধ ‘পশুর হাট’ করার পরিকল্পনা করছেন। পাঠানটুলা পয়েন্ট, রিকাবীবাজার পয়েন্ট, মজুমদারি, সুবিদবাজার, পশ্চিমপীর মহল্লা, নাইওরপুল সিএনজি পাম্প, কাজিটুলা পুকুর পাড়, ঈদগাহ রাবার বাগান, বালুচর পয়েন্ট, মানিকপীর টিলার কমিউনিটি সেন্টারের পাশে, শেখঘাট পয়েন্টে, বাগবাড়ি নরসিংটিলা সড়কে, মিরাবাজার বিরতি পাম্পের পাশের মাঠে, দক্ষিণ সুরমার বাবনা বাজার পয়েন্টের গলিতে, হুমায়ূন চত্বরের শিববাড়ি সড়কের পাশের টায়ারের মাঠে, আখালিয়া মদিনা মার্কেট সংলগ্ন খালি জায়গা, সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট সংলগ্ন খালি জায়গায় অবৈধ ‘পশুর হাট’ বসানোর পরিকল্পনা করছেন। খাদিমনগর ইউনিয়নের হলমুহালদিক ব্রিজের সাথে, টিলাপাড়া পয়েন্টে, লুসাইন মনাফ মিয়ার মিলের সামনে, মাদারমুকামের সামনে ও ছালির মহল পাঠানগাও সড়কের পয়েন্টে অবৈধ ‘পশুর হাট’ বসেছে। এছাড়াও কাজিরবাজারের পশুর হাটের নির্দিষ্ট এলাকা ছেড়ে প্রতিবছর রাস্তায় স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ির সামনের রাস্তায় হাট বসবে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সদর উপজেলায় অনুমোদিত অস্থায়ী ‘পশুর হাট’ ছাড়া অবৈধ ‘পশুর হাট’ বসলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানিয়েছেন সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোশনূর রুবাইয়াৎ।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ-এসএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, নগরী ছাড়াও এসএমপির আওতাধীন এলাকায় অনুমতি ছাড়া কোথাও অবৈধ ‘পশুর হাট’ বসতে দেয়া হবেনা। অবৈধ পশুর হাট উচ্ছেদ এবং ঠেকাতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। আমরা অবৈধ হাট উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে প্রস্তুত রয়েছি।