নিউজ মিরর ডেস্ক
উচ্ছ্বসিত গ্যালারি, প্রাণবন্ত খেলা-সবই ছিল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। কিন্তু শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকল নেমে এলো নিরবতা আর হতাশা। এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে মঙ্গলবার রাতে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হেরে গেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
প্রথমার্ধে প্রতিরোধ গড়েও শেষ মুহূর্তে হজম করা গোলে পিছিয়ে পড়ে লাল-সবুজরা। ৪৫তম মিনিটে সং উই ইয়ং-এর গোলে এগিয়ে যায় সফরকারীরা। থ্রো-ইন থেকে আসা বল পাঞ্চ করতে গিয়ে গোললাইন ছেড়ে যান বাংলাদেশ গোলরক্ষক মিতুল মারমা, এবং সেই সুযোগে বল জালে পাঠিয়ে দেন উই ইয়ং। শেষ মুহূর্তে বাধা দিতে চেয়েছিলেন হামজা চৌধুরী, কিন্তু সফল হননি।
দ্বিতীয়ার্ধে কিছু কৌশলগত পরিবর্তন আনেন বাংলাদেশ দলের কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা। কিন্তু ৫৯তম মিনিটে দ্বিতীয় গোল হজম করতে হয় স্বাগতিকদের। হামি শিয়াহিনের দূরপাল্লার শট রুখে দিলেও রিবাউন্ডে গোল করে যান ইকসান ফান্দি।
তবে হাল ছাড়েনি বাংলাদেশ। ৬৭তম মিনিটে হামজার বুদ্ধিদীপ্ত পাসে বল নিয়ে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ান রাকিব হোসেন। সিঙ্গাপুরের ডিফেন্ডাররা বল লাইন থেকে ফিরিয়ে দিতে ব্যর্থ হন। গোলের ব্যবধান কমতেই জেগে ওঠে গ্যালারি, বাড়ে উত্তেজনা। এরপর আরও কয়েকটি গোলের সুযোগ তৈরি করলেও, ফিনিশিং দুর্বলতার কারণে তা কাজে লাগাতে পারেনি স্বাগতিকরা।
ম্যাচে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন অভিষিক্ত শমিত সোম। প্রথমার্ধেই পাঁচটি নিখুঁত পাস বাড়ান তিনি, যেগুলোর প্রতিটিই ছিল সম্ভাব্য গোলের সুযোগ। কিন্তু ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেন ও ফাহমিদুল ইসলাম সেই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারেননি।
১৬ মিনিটে শাকিল আহাদ তপুর ক্রসে গোল করতে ব্যর্থ হন রাকিব। ৩০ মিনিটে মিতুলের দুর্দান্ত সেভে নিশ্চিত গোল বাঁচায় বাংলাদেশ। কিন্তু প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি হামজা-তপুরা, এবং গোল হজম করে বিরতিতে যায় দল।
দ্বিতীয়ার্ধের শেষভাগে শাহরিয়ার ইমনের হেডে একবার গোলের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল স্বাগতিকরা, কিন্তু সেই চেষ্টাও বিফলে যায়। ফলে রাকিবের একমাত্র গোলে ব্যবধান কমালেও পরাজয় এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ।
দর্শকদের মাঝে ছিল চরম উত্তেজনা আর প্রত্যাশা। ম্যাচটি ঘিরে ছিল দেশজুড়ে আলোড়ন। সেই আবহেই মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল লাল-সবুজের যোদ্ধারা। তবে আক্রমণপ্রবণ খেলায় সিঙ্গাপুরের চেয়ে সুযোগ বেশি পেলেও শেষ পর্যন্ত ফিনিশিং ব্যর্থতায় হতাশাই নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়।
খেলা হারলেও মন জয় করেছে বাংলাদেশ। লড়াইটা ছিল সম্মানের, আর সেখানে হামজারা প্রমাণ করেছেন—তারা দমে যাওয়ার নয়। আগামী দিনের জন্য রেখে গেলেন আশার আলো।