বিশেষ প্রতিবেদক
সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমার কুচাইয়ে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে জমজমাটভাবে চলছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার অনুমোদনহীন ‘মিনারেল ওয়াটার’ ব্যবসা। ‘সিলেট ড্রিংকিং ওয়াটার’ নামক এই প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন থেকে সিসিকের ৪০ নং ওয়ার্ডে লাইসেন্স ছাড়াই অবৈধভাবে এই কোম্পানি পরিচালনা করে আসছেন দক্ষিণ সুরমা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাহরিয়ার আহমেদ রাসেল। তবে দীর্ঘদিন থেকে লাইসেন্স ছাড়া অবৈধভাবে এই ব্যবসা পরিচালনা হচ্ছে বলে জানা নেই সিসিক কর্তৃপক্ষের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স ও পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। নেই কোন বৈধ কাগজাদি। এমনকি পানি বিশুদ্ধ করার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও অত্যাধুনিক ল্যাবের ব্যবস্থাও নেই প্রতিষ্ঠানে। যে ভবনটিতে এই প্রতিষ্ঠানটি, তারও নেই সিসিকের ইমারত নির্মাণের অনুমোদনের লাইসেন্স এবং ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিজের বাড়িতে কিছু লেভার দিয়ে টেপের পানি জারে ভরে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছানো হচ্ছে ‘মিনারেল ওয়াটার’ বলে!
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এই কোম্পানীর পানি পান করে নানান সময় অসুস্থ হয়েছেন ভোক্তারা। অতীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অনুমোদন ছাড়া খাবার পানি বিক্রির অভিযোগ করার কারণে অনেকেই হামলা-মামলার শিকার হতে হয়েছে। ৫ আগস্ট সরকার বদলের পরও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাহরিয়ার আহমেদ রাসেলের এই পানির ব্যবসা চলমান! তারা আরো বলেন, সরকার বদলের পর সে এখন নিজেকে বিএনপি নেতা পরিচয় দিচ্ছে। অথচ তিনি বিগত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার উপর হামলায় জড়িত একাধিক অস্ত্র মামলার আসামী!
একটি সূত্র জানিয়েছে, অতীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রভাবশালী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হওয়ার প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে দক্ষিণ সুরমার কুচাইয়ে তার নিজ বাড়িতে কুচাইয়ের ৪০ নং ওয়ার্ডে (মাজারের বিপরীতে) ‘সিলেট ড্রিংকিং ওয়াটার’ নামক মিনারেল ওয়াটার এর ব্যবসা। সিসিকে তাকমা লাগানোর জন্য নগরের সুরমা মার্কেট থেকে সিল নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর নিজেই করতেন।
নিজেকে বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে, প্রতিবেদককে সব ধরনের প্রয়োজনীয় কাগজাদি রয়েছে বলে জানান স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাহরিয়ার আহমেদ রাসেল। তবে তা তিনি দেখাতে পারেননি। প্রতিবেদককে এসময় তিনি অমুক সাংবাদিক, হমুক সাংবাদিককে চেনেন কিনা বলে জিজ্ঞেস করেন!
বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছেন, সিসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর। তিনি জানান, এরকম কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে তিনি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।