বিশেষ প্রতিবেদক
সিলেট নগরীর ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়সাল আহমদ তাপাদারের বিরুদ্ধে এক কলেজ ছাত্রী অপহরন করে ধর্ষণ পরে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অতি: চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, সিলেট এ ওই কলেজ ছাত্রী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং- ১১৩/২০২৫।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়সাল আহমদ তাপাদার (৫১) জকিগঞ্জের সোনাসারের মৃত আব্দুল মালিক তাপাদারের ছেলে। বর্তমানে তিনি সিলেট নগরীর জালালাবাদ আবাসিক এলাকার ৩৯/৪ হারুন মিয়ার বাসায় বসবাস করছেন। ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা হওয়ার পাশাপাশি তিনি জিন্দাবাজারের এলিগেন্ট শপিং মলের ৪র্থ তলার পপুলার লাইফ ইন্সুইরেন্স কোম্পানী লিমিটেডে কর্মরত একজন মাঠকর্মী। ওই কলেজ ছাত্রীর মামার বীমার কিস্তির টাকা ফয়সাল আহমেদ তাপাদারের কাছে দিলে তিনি সেই টাকা তাদের অফিসে জমা না দিয়ে নিজের কাজে খরচ করে দেন। দীর্ঘদিন ধরে ফয়সাল আহমেদ তাপাদার বীমার টাকাটা পরিশোধ না একদিন মামার বাসায় মাছিমপুর এলাকায় যান। সেখানে গিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করেন। মামার বাসায় তাপাদার ওই কলেজ ছাত্রীকে দেখেন। দেখার পর ওই মেয়ের পিছনে দীর্ঘদিন ঘুরেন। তিনি তাকে কলেজে, রাস্তায় বিরক্ত করতেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তাপাদার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মাধ্যমে ওই কলেজ ছাত্রীর পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেন। ওই ছাত্রীর পরিবার তাপাদারের খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারে সে বিবাহিত এবং তিন সন্তানের জনক! তারা বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে এই মেয়েকে অন্যত্র সড়িয়ে দেয়।

প্রায় ৫ মাস পর সে আবার বাড়ি আসলে সেই সময়ে ওই কলেজ ছাত্রীকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে ৩ দিন শারীরিক নির্যাতন এবং ধর্ষণ করেন। সেই সময়ে ওই ছাত্রীর সাথে থাকা ব্যাগে চেক বই, মোবাইল সব নিয়ে নেয় তাপাদার। ধর্ষনের পর ওই ছাত্রীর আপত্তিকর কিছু ভিডিও করে রাখেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের মানুষ তাপাদার, আপত্তিকর কিছু ভিডিও সেই ভয়ে ফেসবুকে আপলোড করবে হুমকি দিয়ে ওই ছাত্রীকে জাল-কাবিন নামার মাধ্যমে তাকে বিয়ে করে। তবে সে তাকে নিজের বাড়িতে না তুলে কখনও মামার বাড়িতে, কখনও হোটেলে রাখতো। বাড়িতে তুলতে বললেই ওই ছাত্রীকে মারধর করতো।
দীর্ঘদিন এরকম চলে। মেয়েটি আত্মহত্যাও করেতে চেয়েছিলো। ৫ আগস্ট সরকার বদলের পর আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়সাল আহমেদ তাপাদার মামলার ভয়ে আড়ালে চলে যায়। পরে এ ঘটনায় অতি: চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, সিলেট এ ওই কলেজ ছাত্রী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। এখন সে নিজেকে বাঁচাতে অপহরনের সময়ে নেয়া ওই কলেজ ছাত্রীর চেক বইয়ের পাতা বিভিন্ন লোকের কাছে দিয়ে তার পরিবারের কাছে টাকা দাবি করছে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়সাল আহমদ তাপাদার বিরুদ্ধে বিগত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার উপর হামলায় জড়িত একাধিক মামলার আসামী! তিনি প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রকাশ্যে ঘুরছেন।

বিষয়টি জানতে ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়সাল আহমদ তাপাদারের মুঠোফোনে কল করলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।