শনিবার, ০৭ Jun ২০২৫, ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন

নোটিশ
সাইটের সংস্কার কাজ চলছে, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পাশে থাকার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।
সিলেটে মূর্তিমান আতঙ্কের নাম আফসার খান সাদেক

সিলেটে মূর্তিমান আতঙ্কের নাম আফসার খান সাদেক

বিশেষ প্রতিবেদক
আওয়ামী লীগের দেড় দশকের দুঃশাসনে প্রবাসে থেকেও এখনও সিলেটে মূর্তিমান আতঙ্ক যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও লন্ডন ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আফসার খান সাদেক। ২০১৬ সালে পূর্ব লন্ডনের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম ভাস্কর্য তৈরি করে পরিচিতি পাওয়া সাদেকের কুকীর্তির শেষ নেই।

নারী কেলেঙ্কারি, সিলেটে জমি দখল, বাসা দখল, তদবির বাণিজ্য, অন্যকে বাদি সাজিয়ে বিএনপি এবং জামায়াতের লোকসহ সাধারণ মানুষদের মামলা দিয়ে হয়রানী, দলীয় নেতা-কর্মীদের দিয়ে বিভিন্ন লোকের উপর হামলা ও প্রশাসনের অপব্যবহার এসব অভিযোগ তার বিরুদ্ধে অহরহ। তবে অদৃশ্য কারণে এসব অভিযোগ আমলে নেয়নি আইন প্রয়োগকারী কোনো সংস্থা। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের এই নেতা বিভিন্ন মানুষকে প্রবাসে বসে নিজের লোকদের দিয়ে হয়রানী করা অব্যাহত রেখেছেন।

তার বিরুদ্ধে আবারও অভিযোগ উঠেছে প্রবাসে বসেই সিলেটের প্রশাসন ও সন্ত্রাসীদের সমন্বয়ে আরেক প্রবাসীর বাসা দখলের চেষ্টার!

সম্প্রতি সিলেট নগরীর কুমাড়পাড়ার ঝর্নার পাড়ের ঝর্না-৪২ নাম্বার কানাডা প্রবাসী জামাল উদ্দিনের বাসা দখলের চেষ্টার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, প্রশাসনের এক কর্মকর্তার সাথে আফসার খান সাদেকের ভাতিজা যুবলীগ নেতা মাহবুব লোহার পাইপ হাতে প্রবাসী জামালের বাসায় গিয়ে হামলা করেন।

ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন – সাদেকের ভাতিজা যুবলীগ নেতা মাহবুবের হামলা।

মাহবুব সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে, বাসার মহিলার উপর অতর্কিত হামলা করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বাসার বর্তমান বাসিন্দা গৃহিনী শাহনাজ পারভিন কনি। এঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কনির পরিবার।

এর আগেও চলতি বছরের গত ৪ ফেব্রুয়ারী আফসার খান সাদেকের নির্দেশে নিজের বোন আলেয়া বেগম, বড়ভাই আক্তার হোসেন খান ও দিলদার হোসেন খান, ভাতিজা যুবলীগ নেতা মাহবুব, হাবিবসহ অন্যান্যরা কানাডা প্রবাসী জামাল উদ্দিনের কুমাড়পাড়ার ঝর্নার পাড়ের ঝর্না-৪৬ নাম্বার প্লটের গেইটের দেয়ালের নামফলক ভেঙে তাদের নামফলক লাগান। ঘটনাটি সিসি ক্যামেরায় দেখে প্রতিবাদ করেন স্থানীয়রা। পরে ৬ ফেব্রুয়ারী রিকাবীবাজারে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

আফসার খান সাদেক পতিত আওয়ামী লীগের আমলে পলাতক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সবার অপব্যবহার করেছেন ইচ্ছে মতো। নিজের আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে সেই সময়ে প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে করেছেন সাধারণ মানুষদের হয়রানী। করেছেন প্রশাসনের সর্বোচ্চ অপব্যবহার। তার বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ করেছে তাকে অন্য লোক মাধ্যমে মামলায় আসামী বানিয়ে করা হয়েছে ঘর ছাড়া!

এতসব করেও তিনি ক্ষান্ত হননি! এবার করেছেন নতুন পরিকল্পনা। কানাডা প্রবাসী জামাল উদ্দিন জানিয়েছেন সিলেট নগরীর মিরাবাজার কেন্দ্রীক বিএনপির কিছু লোকদের টাকা দিয়ে প্রবাসী জামালের বাসা দখলের করাবেন!

এরআগেও তিনি টিলাগড়ের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, যুবলীগের শামিম ইকবাল গ্রুপের আব্দুল্লাহ আল মামুন, আওয়ামী লীগ নেতা শওকত আমিন তৌহিদের লোকদের দিয়ে বিভিন্ন মানুষের বাসা দখল করে ছিলেন।

এ বিষয়ে কানাডা প্রবাসী জামাল উদ্দিন বলেন, আফসার খান সাদেক আমার পিছনে উঠেপরে লেগেছে। আমার সিলেট সিটির কুমারপাড়াস্থ বাসা দখলের অপচেষ্টাসহ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। আওয়ামী লীগের আমলে এসএমপির কোতোয়ালী থানার ওসির সহযোগিতায় একাধিক মামলায় আমাকে ও আমার স্ত্রীকে আসামি করা হয়েছে। অথচ যখন মামলা করা হয় তার অনেক আগেই আমি আমার পরিবার নিয়ে কানাডা পাড়ি জমাই। আফসার খান সাদেক কেবল আমার বাড়ি দখলের অপচেষ্টাই করেনি। এলাকার অনেকেই মামলার রায় নিজের পক্ষে পেয়েও তাদের জায়গা-জমির দখল নিতে পারছেন না। প্রবাসে থেকেও সিলেটে মূর্তিমান আতঙ্কের নাম আওয়ামী লীগের এই আফসার খান সাদেক!

এছাড়াও সিলেটের সংবাদ মাধ্যমের তরুণ উদ্যোক্তা প্রবাসী জাবেদ আহমেদের একটি জায়গা বেদখল করে রেখেছে আফসার খান সাদেক। আদালতের রায় জাবেদের পক্ষে থাকার পরও প্রশাসন ও সন্ত্রাসীদের কারণে জায়গার দখল নিতে পারছে না বলে প্রবাসী জাবেদ আহমেদ।

প্রবাসী জাবেদ আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে আমলে দেশে থাকাকালিন সময়ে আফসার খান সাদেকের ইশারায় তার লোক দিয়ে আমার বিরুদ্ধে ৪টি মামলা দায়ের করে। সে আমাকে ও আমার মামাকে দীর্ঘদিন জেল খাটিয়েছে।

গৃহিনী শাহনাজ পারভিন কনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে আমলে আফসার খান সাদেক তার বোন আলেয়া বেগম, আমি, আমার স্বামী এম আব্দুল মুকিত, প্রবাসী জামাল উদ্দিন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করে ছিলেন। সেই মামলায় ওয়ারেন্ট হয়। এই মামলা থেকে আমি জামিন নিয়েছি। পুলিশ আসলো পুলিশের কাজে, তার সাথে আফসার খান সাদেকের ভাতিজা যুবলীগ নেতা মাহবুব লোহার পাইপ হাতে নিয়ে বাসায় পুলিশের সামনে হামলা করে। আমাদের তাড়িয়ে দিতে চেয়েছিলো। পরে স্থানীয় বাসিন্দার এসে প্রতিবাদ করলে তারা চলে যায়। আমি এখন সুস্থ হয়েছি, তাদের বিরুদ্ধে আমি মামলা করবো।

প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে আফসার খান সাদেকের ভাতিজা যুবলীগ নেতা মাহবুব লোহার পাইপ হাতে প্রবাসী জামালের বাসায় হামলার ঘটনা মিথ্যা বলে জানিয়েছেন এসএমপির কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মো. জিয়াউল হক। তিনি জানান, ওই বাসায় একাধিক মামলার ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামী জেলা যুবলীগ নেতা এম আব্দুল মুকিত অবস্থান করছেন খবর পেয়ে সেখানে অভিযানে যায় পুলিশ। বাসার মহিলা যদি এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেন তাহলে তদন্তে সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আওয়ামী লীগ সরকারে আমলে দেশে পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা অনেকের বাসা, জমি এভাবেই দখল করে ছিলো। সেই সময়ের প্রেক্ষাপট ছিলো ভিন্ন। বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশ পুলিশের ইমেজও ভিন্ন। সাধারণ মানুষ পুলিশকে সম্মান দিতে চায়। পুলিশ গিয়েছে পুলিশের কাজে, তার সাথে আফসার খান সাদেকের ভাতিজা যুবলীগ নেতা মাহবুব কেনো?

প্রশ্ন থেকে যায়, আদালতের রায় যেখানে ওরা মানে না! তাহলে কনি কি মামলা করলে পুলিশ এর ব্যবস্থা নিবে?

আগামী পর্বে আরো আসছে বিস্তারিত….

 

এর আগে প্রকাশিত প্রতিবেদন পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা সাদেকের ক্ষমতার অপব্যবহার

 

শেয়ার দিয়ে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন, ধন্যবাদ।




© All rights reserved © 2012 Newsmirror24.news
Design BY Web Home BD
ThemesBazar-Jowfhowo