জগন্নাথপুর সংবাদদাতা
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ডেভিল জুবায়ের আহমদ ঝুনুকে (৪৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার (৬ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার ইসমাইল চক গ্রামে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত জুবায়ের আহমেদ ঝুনু চিলাউড়া ইউনিয়নের ইসমাইল চক গ্রামের ছন্দু মিয়ার ছেলে। তিনি ৫নং চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নয়ের ৬নং ওয়ার্ড শাখা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
এছাড়াও ইসমাইল চক উত্তরপাড়া জামে মসজিদের মোতাওয়াল্লী ছিলেন।

তার বিরুদ্ধে এলাকায় বিস্তর অভিযোগ : মোতাওয়াল্লী থাকা অবস্থায় মসজিদের জমি দখল এবং মসজিদের জমি নিজ নামে রেজিষ্ট্রেশনসহ এলাকার দেশী-বিদেশী ব্যক্তিদের কাছ থেকে দেয়াল নির্মাণ ও মসজিদের উন্নয়নের নামে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার মতো অর্থ সংগ্রহ করে মসজিদের তহবিলের ২ লক্ষের অধিক টাকা নিজ স্বার্থে ব্যবহার ও আত্মসাৎ করার অভিযোগ।

তার কাছে এ বিষয়ে মসজিদের কমিটির অন্য সদস্যরাসহ স্থানীয় মানুষ তার কাছে হিসাব চাইলে নানা টালবাহানাসহ সাধারণ মানুষকে মামলা, হামলা, হয়রানিসহ হত্যার হুমকি দেন। তার এমন আচরণে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে মসজিদের নতুন কমিটি গঠন করতে বাধ্য হন। এছাড়াও উল্লেখিত সমস্যার প্রতিকারের জন্য নতুন কমিটির সেক্রেটারি ময়না মিয়া বাদী হয়ে জগন্নাথপুর থানায় একটি অভিযোগ দাখিল দেন।

জুবায়ের আহমদ ঝুনু চাঞ্চল্যকর বাউধরণ মনির হত্যার মামলার অন্যতম আসামী ছিলেন। এছাড়াও সাথে ইসমাইল চক গ্রামের নাদিয়ার এসিড নিক্ষেপের মামলার প্রধান আসামী ছিলেন।

সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাব খাটিয়ে মনির হত্যার ও নাদিয়ার মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি নেয়। এছাড়াও স্থানীয় জলমহাল দখল, ভূমি দখল, চাঁদাবাজি, অবিচার, জুলুম নির্যাতনসহ এমন কোনো অপরাধ নেই যা তিনি করেন নি।

এছাড়া ও তার সহযোগী যারা হত্যা, ডাকাতি, লুটপাত ও চুরির মামলার সাথে জরিত। যার মধ্যে অন্যতম আইত্ব উদ্দিন, আফসর উদ্দিন, নোমান আহমেদ, সেফুল মিয়া, আলী হোসেন, মুরসালিন, মিজান আহমেদ, আবু মিয়া।

স্থানীয়রা জানান, জুবায়ের আহমদ ঝুনু স্থানীয় মানুষদের বিদেশ পাঠানোর নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বাড়িতে আত্মগোপণে ছিলেন। সে গ্রেফতারের পরে এখন সবাই মুখ খোলা শুরু করেছে। জুবায়ের আহমেদ জুনুর গ্রেফতারে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি নেমেছে এবং এলাকাবাসী তার অপরাধ কর্মের সহযোগীদেরও গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। এলাকাবাসীরা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

জুবায়ের আহমদ ঝুনুকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঞা বলেন, মিরপুর ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ মামলায় ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে তাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৯ নভেম্বর উপজেলার মিরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর নুর বাদী হয়ে কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও চুরির অভিযোগে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানসহ আওয়ামী লীগের ৪৯ নেতাকর্মীর নামে জগন্নাথপুর থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২৫/৩০ জনকে আসামি করা হয়। এ পর্যন্ত ওই মামলায় ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে আদালতে জামিনের জন্য হাজির হলে; আরও তিন নেতাকে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠায় আদালত।