শুক্রবার, ০৬ Jun ২০২৫, ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন

নোটিশ
সাইটের সংস্কার কাজ চলছে, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পাশে থাকার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।
সিলেট কারাগারে আ. লীগ নেতাদের ওয়ার্ড থেকে মোবাইল উদ্ধার

সিলেট কারাগারে আ. লীগ নেতাদের ওয়ার্ড থেকে মোবাইল উদ্ধার

সকল কারাগারে রেড অ্যালার্ট জারি

বিশেষ প্রতিবেদক
সিলেট মেট্রোপলিটন কারাগারে আওয়ামী লীগের নেতাদের ওয়ার্ড থেকে মোবাইল সেট উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকালের এ ঘটনায় দেশের সকল কারাগারে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। দুপুরে বিষয়টি জানাজানি হলে সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তবে দায়ী কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি প্রিজন মো. ছগির মিয়া জানান, ঘটনার পরই তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ ছাড় পাবেন না।

কারা সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল সাড়ে ৭ টায় নিয়মিত ‘কেইস টেবিল’ শেষে জেলার আরিফুর রহমান অন্যদের সঙ্গে নিয়ে ওয়ার্ড তল্লাসিতে যান। সকাল পৌণে ৮ টায় জবা ওয়ার্ডের টয়লেটের কমোড থেকে একটি বাটন মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। সেটটি ডারবি সিগারেটের খালি প্যাকেটে পলিথিন দিয়ে মোড়ানো ছিল। ওয়ার্ডে থাকা ৪৮ বন্দির কেউ জিজ্ঞাসাবাদে মোবাইলের মালিকানার কথা স্বীকার করেন নি। সেটটি জব্দ করে কারা অফিসে রাখা হয়েছে বলে জেলার নিশ্চিত করেছেন। জবা ওয়ার্ডে বিভিন্ন মামলায় আটক আওয়ামী লীগের অধিকাংশ বন্দি রয়েছেন।

সূত্র জানায়, সিলেট মেট্রোপলিটন কারাগারের একমাত্র ডেপুটি জেলার মো. মনিরুল হাসান পলাশ ও ভারপ্রাপ্ত সর্বপ্রধান কারারক্ষী জিতেশ চন্দ্র সেন মোবাইল সেট কাজের সঙ্গে জড়িত বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সূত্র মতে, ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র জেল সুপার ও জেলারকে পাশ কাটিয়ে পলাশ ও জিতেশ সিলেট মেট্রোপলিটন কারাগারে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে বেড়ে গেছে বন্দি নির্যাতন। টাকা ছাড়া কিছুই বুঝেন না পলাশ ও জিতেশ। বন্দিদের সকল অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। তার পরও রহস্যজনক কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

জানা যায়, ডেপুটি জেলার মো. মনিরুল হাসান পলাশ আগে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। রাজনৈতিক চেতনার কারণে তিনি কারাগারে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অবৈধ সুবিধা দিচ্ছেন। তার ঘুষ আদায়ের টিমে যুক্ত করেছেন ভারপ্রাপ্ত সর্বপ্রধান কারারক্ষী জিতেশ চন্দ্র সেনকে। তার বাড়ি কারাগার থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে। টাকার বিনিময়ে তারা বন্দিদের বিভিন্ন অবৈধ সুবিধা দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগের নেতাদের রাতে মোবাইলে কথা বলার সুযোগ করে দিয়ে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। পলাশ ও জিতেশ বন্দিদের থাকার জায়গা বিক্রি করেও মাসে মোটা অঙ্ক আদায় করেন। বাইরের খাবার এনে দিয়েও তারা টাকা হাতিয়ে নেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। ডেপুটি জেলার অফিস কলে বন্দিদের দেখা করিয়ে দিয়েও আদায় করেন লাখ লাখ টাকা।

সূত্র জানায়, ডেপুটি জেলার মো. মনিরুল হাসান পলাশ গত ফেব্রুয়ারি মাসে সিলেট মেট্রোপলিটন কারাগারে যোগদান করেন। এর আগে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি প্রিজন কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। ডিআইজি মো. ছগির মিয়ার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তিনি কাউকে পাত্তা দেন না। সব কিছু নিজের মতো নিয়ন্ত্রণ করে সুপার ও জেলারকে ধরাশায়ী করেন।

সূত্র মতে, ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বনিক ১৩-০৪-২০২৫, জেলার আরিফুর রহমান ১৪-১১-২০২৪, ডেপুটি জেলার মো. মনিরুল হাসান পলাশ ১৯-০২-২০২৫ এবং ভারপ্রাপ্ত সর্বপ্রধান কারারক্ষী জিতেশ চন্দ্র সেন ১৭-০৩-২০২৫ সিলেট মেট্রোপলিটন কারাগারে যোগদান করেন। অন্যদিকে ডিআইজি প্রিজন মো. ছগির মিয়া ১৪-০১-২০২৩ থেকে সিলেট রেঞ্জে কর্মরত আছেন।

জানা যায়, সিলেট বন্দরবাজারের পুরোনো কারাগার সংস্কার করে ২৩-০২-২০২৫ এটিকে ‘সিলেট মেট্রোপলিটন কারাগার’ হিসেবে চালু করা হয়। এখানে সিলেট মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করা বন্দিদের রাখা হয়। গতকাল শনিবার রাত পর্যন্ত এই কারাগারে ৬৮৪ জন বন্দি ছিলেন। এর মধ্যে ৫০ ভাগ আসামি ৫ আগস্ট পটপরিবর্তেন পর থেকে বিভিন্ন মামলায় আটক হন। তারা আগে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন। এই কারাগার চালু হওয়ার পর তাদের স্থানান্তর করা হয়।

শেয়ার দিয়ে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন, ধন্যবাদ।




© All rights reserved © 2012 Newsmirror24.news
Design BY Web Home BD
ThemesBazar-Jowfhowo