নিউজ মিরর ডেস্ক
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি মামুন রশিদকে সামাজিক অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে সিলেট জেলা বিএনপি। রোববার রাত ১২টার দিকে দলটির সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরীর যৌথ স্বাক্ষরে ওই নোটিশ হোয়াটস অ্যাপ বার্তায় মামুন রশীদকে পাঠানো হয়। পাশাপাশি হার্ডকপিও সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই নোটিশে তাঁকে সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, “দায়িত্বশীল অবস্থানে থেকেও আপনি সম্প্রতি এমন কিছু কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন, যা সামাজিক অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলার জন্ম দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ধরনের আচরণ দলীয় আদর্শ, শৃঙ্খলা ও নীতিমালার পরিপন্থী। আপনার এই অবস্থানকে সংগঠনের প্রতি বিরুদ্ধাচরণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কেন আপনার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা আগামী ১৯ মে’র মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে বলা হলো।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, “মামুন রশীদকে সাত দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। তার লিখিত ব্যাখ্যার ভিত্তিতে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কারন দর্শানোর চিঠি তার ব্যক্তিগত হোয়াটস অ্যাপ নাম্বারে পাঠানো হয়েছে। আজ হার্ড কপি পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়ছে”।
নোটিশে নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগের বিস্তারিত উল্লেখ না থাকলেও, জেলা বিএনপির এক নেতা বলেন রোববার দুপুরে কানাইঘাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক আফসার উদ্দিন আহমদ স্থানীয় একটি মসজিদে গেলে কিছু ব্যক্তি তাকে মারধর করে মামুন রশীদের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে মামুন রশীদ তাকে অশোভন ভাষায় গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে আফসার উদ্দিনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই মূলত মামুন রশীদকে শোকজ করা হয়।
এই শোকজ প্রসঙ্গে মামুনুর রশিদ বলেন “ আওয়ামীলীগ আমলে উপজেলা আওয়ামী লীগের মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক আফসার উদ্দিন কানাইঘাটের বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে। বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। তার ভাই আওয়ামীলীগ নেতা বাহাউদ্দিন নাসিমের সহপাঠি হওয়ায় তার প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসন দিয়ে এমন কোন নির্যাতন নেই যে করেন নি আফসার। আমি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় কোন অনিয়ম না থাকলেও সে তার প্রভাব খাটিয়ে আমাকে বহিস্কার করিয়েছে। অথচ যেদিন আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয় সেদিনই আমার বাড়ির পাশে সে সংবর্ধনা নিতে আসে। নৌকা মার্কার চেয়ারম্যানকে কারা সংবর্ধনা দিবে, নিশ্চয়ই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। এসব ক্ষোভ থেকেই এলাকার লোকজন তাকে ধরে আমার বাড়িতে নিয়ে আসে। পরিস্থিতি সামাল দিতেই তাকে আমার বাড়ির একটি কক্ষে নিরাপদে রেখে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি”। তবে তিনি স্বীকার করেন, তার বাড়িতে আনার পর তাকে গালিগালাজ করা ঠিক হয়নি।
মামুন দাবী করেন, এই ঘটনায় তাকে শোকজ করায় আওয়ামী লীগের দোসররা উজ্জিবিত হবে এবং এটা দল হিসেবে বিএনপির জন্য ক্ষতিকর। এ শোকজের পর আর কোন ফ্যাসিস্টের দোসরকে চিহ্নিত করতে পিছু হটবে দলীয় নেতাকর্মীরা।