বিশেষ প্রতিবেদক
বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে অপসারণ অত:পর ইউপি সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ সভাপতি আলতাফ হোসেন নিজেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা দিয়ে চেয়ারম্যানের আসন দখল করার ঘটনায় যখন উপজেলাব্যাপী চলছে আলোচনা সমালোচনা ঠিক তখনই নতুন করে আবার তিনি জন্ম দিলেন আলোচনার।
বৃহস্পতিবার তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। আওয়ামী লীগের শীর্ষ এই নেতার মিথ্যাচার ও তার অতিত কর্মকান্ড এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বমহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
আলতাফ হোসেন বৃহস্পতিবারও চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসে সেবাদানের ছবিসহ পোস্ট করেছেন। পাশাপাশি বলেছেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাকি তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা মুন্না জানিয়েছেন, এ রকম অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি।
এদিকে আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন এলাকাবাসীসহ পরিষদের সদস্যগণ। আজ শুক্রবার ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করেছেন।
অপরদিকে, বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আমান উদ্দিনকে গত ১৯ মে স্থানীয় সরকার, সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শূন্যপদে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ আলতাফ হোসেন প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন বুধবার থেকে। তিনি নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি ছবি পোস্ট করে ইউনিয়নবাসীর সহযোগিতা চান। তিনি ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নেয়া এবং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের নিয়ে কোন সাধারণ সভা না করে নিজে ঘোষণা দিয়ে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করায় আপত্তি তুলেছেন ৬ ইউপি সদস্য। তারা বিষয়টি লিখিতভাবে সিলেটের জেলা প্রশাসককে অবহিত করেন। বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগপত্রটি দেয়া হয়েছে।
প্যানেল চেয়ারম্যান-২ ফয়জুল হক নজমুল বলেন, যে প্রক্রিয়ায় তিনি প্রভাব খাটিয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান হয়েছিলেন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়, সে একই প্রক্রিয়ায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। এটি কোনভাবে আইনসিদ্ধ নয়। আমরা বিষয়টি সিলেটের জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানিয়েছি। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান বরখাস্ত হওয়ার পর তাঁর কার্যালয় তালাবদ্ধ ছিল। আমরা জেনেছি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গত মঙ্গলবার ট্রেনিংয়ে ঢাকায় গেছেন। তাহলে চেয়ারম্যানের কার্যালয় কার অনুমতি নিয়ে খোলা হয়েছে।
ঢাকায় অবস্থান করা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুস্তফা মুন্না বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, সেটি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, চেয়ারম্যানের কার্যালয় কারো অনুমতি না নিয়ে যে প্রক্রিয়ায় খোলা হয়েছে সেটি ঠিক হয়নি। এখানে ব্যত্যয় হয়েছে। এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে তিনি যেসকল কাগজপত্রের স্বাক্ষর করেছেন সেগুলো বাতিল হবে।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, আলতাফ হোসেনের ছোট ভাই বিএনপি নেতা সরোয়ার হোসেন দলের প্রভাব খাটিয়ে নিজের আওয়ামী ভাইকে চেয়ারম্যানের আসনে বসিয়েছেন।