নিউজ মিরর ডেস্ক
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশেও প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি জুন মাসের প্রথম ৯ দিনেই দেশে ২৭ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে একজন মৃত্যুবরণ করেছেন।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন জানান, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে জ্বর, সর্দি, কাশিসহ নানা উপসর্গ দেখা দিচ্ছে এবং এর মাঝে নতুন ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে করোনা সংক্রমণও বাড়ছে। তবে তিনি আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, “হাত ধোয়া, মাস্ক পরিধান, জনসমাগম এড়িয়ে চলা—এই সাধারণ স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চললে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।” পাশাপাশি তিনি ডেঙ্গু নিয়েও সতর্ক থাকতে বলেন, কারণ ডেঙ্গু ও করোনা একসাথে আক্রান্ত হলে জটিলতা বাড়তে পারে।
গত দুই সপ্তাহে দেশে করোনা সংক্রমণের হার বাড়ছে। সর্বশেষ সোমবার (৯ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে পাঁচজনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর আগের দিন শনাক্ত ছিল তিনজন, যা একদিনেই প্রায় ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি।
এ অবস্থায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
৪ জুন ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনায় এক পুরুষ রোগীর মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও মন্ত্রণালয় থেকে বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:
বারবার সাবান দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরে থাকা, চোখ, মুখ ও নাক স্পর্শ না করা, হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু বা বাহু ব্যবহার করা।
আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের সব স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য ডেস্কগুলোতে সার্ভেইল্যান্স জোরদার করা হয়েছে।
এছাড়া রেল ও মেট্রোরেলে মাস্ক ছাড়া যাত্রী চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
সন্দেহভাজন উপসর্গ দেখা দিলে ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং প্রয়োজনে নিকটস্থ হাসপাতালে বা আইইডিসিআর হটলাইনে (০১৪০১-১৯৬২৯৩) যোগাযোগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা অন্যান্য জটিল রোগ আছে, তাদের জন্য করোনা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই সবাইকে সতর্ক থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।