নিউজ মিরর ডেস্ক
কাজ চাই ভাত চাই, স্টোন ক্রাশার সচল চাই, পাথর কোয়ারী সচল চাই। হাজারো শ্রমজীবী – ব্যবসায়ীর মুহুর্মুহু স্লোগানে মঙ্গলবার প্রকম্পিত হয়েছিলো সিলেটের রাজপথ। সম্প্রতি বন্ধ করে দেওয়া সিলেটের শতশত স্টোন ক্রাশার এবং পাথর কোয়ারী খোলে দেয়ার দাবীতে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে এক বিশাল মানব বন্ধনের আয়োজন করা হয়।
বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট জীবিকা নির্বাহ কারী ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এ মানব বন্ধনে সিলেটের প্রান্তিক জনপদ থেকে মিছিল সহকারে হাজারো ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী শ্রমিক অংশগ্রহন করেন।
ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক আবদুল জলিল এর সভাপতিত্বে এবং সাব্বির আহমদ ফয়েজ এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর বি এন পির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সিলেট মহানগর আমীর ফখরুল ইসলাম, জেলা জামায়াত সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন, জাতীয় নাগরীক পার্টির সিলেট জেলা আহবায়ক নাজিম উদ্দীন সাহান,সিলেট জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দিলু মিয়া,কার্যকরি সভাপতি আবদুস সালাম, কোম্পানীগঞ্জ পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শওকত আলী বাবুল, এয়ারপোর্ট থানা পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শামসুল আলম, সিনিয়র সহ সভাপতি সৈয়দ সালেহ আহমদ শাহনাজ, শাব্বির আহমদ, ,কবির হোসেন, সৈয়দ মকসুদুর রহমান মতিন, রাজন আহমদ, রুহুল আমিন, বুলবুল আহমদ,লাল মিয়া,মশ্রব আলী, আজির উদ্দিন,জাফলং পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস উদ্দিন লিপু, কোম্পানীগঞ্জ পাথর ব্যবসায়ী নেতা বাবুল মিয়া, আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম, প্রমুখ।
মানববন্ধনে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার মতো ভারত থেকে পাথর আমদানীর খায়েশে পরিবেশের দোহাই দিয়ে সিলেটের লাখো মানুষের কর্মসংস্থান বন্ধ করা হয়েছে। চব্বিশের এই মহান বিপ্লব পরবর্তী সময়ে গণ বিরোধী এ সিদ্ধান্তে সিলেটের আপামর জনগন হতাশ হয়েছে। তিনি বলেন মানুষের কর্মসংস্থান বন্ধ করে কোথাও উন্নয়ন সাধন সম্ভব নয়।
সিলেট মহানগর বিএনপির সেক্রেটারী এমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, – সিলেটের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পাথর সংশ্লিষ্ট জীবিকার উপর নির্ভরশীল। সরকারের অপরিনামদর্শী কতিপয় মহল নিজেদের স্বার্থে সিলেটের পাথর সংশ্লিষ্ট জীবিকা বন্ধ করার পায়তারা করছে। শত শত ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে হাজারো মানুষকে বেকারত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি অবিলম্বে বিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ লাইন পুনঃ সংযোগ করে ক্রাশার মিশিন চালু ও পাথর কোয়ারী চালুর দাবী জানান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সিলেট মহানগর আমীর ফখরুল ইসলাম বলেন, সাধারন মানুষের বিপক্ষে গিয়ে কোন সরকারই টিকতে পারেনা, তিনি বলেন, – সিলেটের মানুষের জন্য পাথর সংশ্লিষ্ট জীবিকা ছাড়া আর বড়ো কোন কর্মক্ষেত্র নেই। এই কর্মক্ষেত্র থেকে সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করার পরিনাম ভালো হবেনা। তিনি অবিলম্বে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর কোয়ারী থেকে পাথর আহরনে সরকারকে উদ্যোগি হবার আহবান জানান।
সিলেট জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী জয়নাল আবেদীন বলেন, – পাথর সম্পদ এ অঞ্চলের মানুষের জীবিকা নির্বাহে আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ামত। এই নিয়ামত থেকে মানুষকে বঞ্চিত করা ফ্যাসিবাদি চরিত্রের নামান্তর। তিনি বলেন,- ভারত থেকে নিম্নমানের পাথর আমদানীর জন্য পলাতক ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মারা সিলেটের লাখো মানুষের কর্মসংস্থান কেড়ে নেয়ার পায়তারা করছে। তিনি অবিলম্বে পাথর কোয়ারী খোলে দিয়ে এবং পাথর ক্রাশার মিশিনের বিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন করে মানুষের কর্মসংস্থান ফিরিয়ে দেয়ার দাবী জানান। মানব বন্ধনে দাবী আদায়ের জন্য কর্মসূচি ঘোষনা করা হয়।
কর্মসূচি হলো-২৮ জুন (শনিবার) সিলেটের সব পাথর কোয়ারি ও ক্রাশার মিলে লোড-আনলোড পয়েন্টে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি, ৩০ জুন থেকে: সব ধরনের পণ্য পরিবহনের ওপর ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি, ২ জুলাই থেকে: সিলেট জেলার পণ্য পরিবহন ও গণপরিবহনে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি।
মানববন্ধন শেষে এক বিরাট বিক্ষোভ মিছিল নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে।